• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫
উদ্দেশ্য জ্বালানির আমদানি ব্যয় মেটানো

পেট্রোবাংলা ঋণ চায় ৭,১৮১ কোটি টাকা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২৩, ০১:২৭ পিএম
পেট্রোবাংলা ঋণ চায় ৭,১৮১ কোটি টাকা

তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন, রাষ্ট্রায়াত্ত কোম্পানি পেট্রোবাংলা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৭,১৮১ কোটি টাকা ঋণ চেয়েছে। 

আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এলএনজি আমদানির ব্যয় মেটাতে এই ঋণ চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

জানা গেছে, অর্থ সংকটে থাকা প্রতিষ্ঠানটি মে মাসের শেষ সপ্তাহে চিঠি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়কে। চিঠিতে ২০১৮ সাল থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত ২৫ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা লোকসানের কথা উল্লেখ করা হয়। 

এতে আরও বলা হয়, এলএনজি আমদানির ব্যয় মেটাতে বর্তমানে তাদের এই পরিমাণ ঋণ প্রয়োজন। বিশ্ববাজারে স্পট এলএনজির দর বাড়ায় ২০২২ সালের মে মাস থেকে এক বছরে তাদের লোকসান বেড়েছে আট হাজার কোটি টাকারও বেশি।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা তার নাম গোপণীয়তার শর্তে বলেন, আমরা পেট্রোবাংলার ঋণ প্রস্তাব নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা করবো। 

তাদের গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের বর্তমান পরিস্থিতি, পুঞ্জিভুত দায়, অপারেটিং কস্টসহ আয়-ব্যয়ের যাবতীয় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে। তাই প্রস্তাব করলেই যে ঋণ দেওয়া হবে তা এখনও বলা মুশকিল।

সূত্র মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় সংস্থাটি আমদানি মেটাতে গ্যাস উন্নয়ন তহবিলে রাখা আমানতের প্রায় পুরোটাই খরচ করেছে। 

এই তহবিলের ১৯,০০০ কোটি টাকার মধ্যে অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র ১,৫০০ কোটি টাকা।

জানা গেছে, এই খাতে ২০১৮ সাল থেকে পেট্রোবাংলাকে সরকার ২২,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এছাড়া চলতি অর্থবছরের বাজেটে এলএনজি খাতে ৬,০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। 

যার পুরোটাই পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

আরও জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি বাবদ ৩৫,০০০ কোটি টাকা রাখা হলেও গত বছরের বকেয়া ভর্তুকি মেটাতে এখান থেকেই ৩০,০০০ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। 

ফলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য মাত্র ৫ হাজার কোটি টাকার জোগান থাকবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণে সরকারকে সুদ গুণতে হয় ৬.৭৫ শতাংশ। 

এই অবস্থায় সরকার যেখানে গত আগস্ট থেকে বিদ্যুতের বকেয়া পরিশোধ করছে না তখন আগামী অর্থ বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এলএনজি আমদানিতে অর্থায়ন করা হবে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ।

এ খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন- বর্তমানে পেট্রোবাংলার উচিত হবে বকেয়া আদায়ে জোর দেওয়া।

সংস্থাটির অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মো. অলতাফ হোসেন বলেন, এই মুহুর্তে ঋণ আবেদনের পরিস্থিতি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।

যেভাবে অর্থ সংকটে পড়ে পেট্রোবাংলা

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২০ সালে রাষ্ট্রায়াত্ত বিভিন্ন কোম্পানি, সংস্থার উদবৃত্ত তহবিল কোষাগারে স্থানান্তর করা শুরু হলেই পেট্রোবাংলার অর্থ সংকট শুরু হয়। 

ওই সময় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো উদবৃত্ত ও অলস তহবিল সরকারের কাছে জমা দিতে হয় পেট্রোবাংলাকে।

সেসময় বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে সংস্থাটির আমানত ছিল ১৭,৭৬৩ কোটি টাকা। এর বিপরীতে জমা দিতে হয় ৫,৭৮১ কোটি টাকা। 

এরপর থেকেই শুরু করোনা মহামারি। তারপর রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ। একের পর এক নানা অভিঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সংস্থাটি। বাড়তে থাকে লোকসান আর লোকসান। 

ধারাবাহিকভাবে ভর্তুকির চাপ বাড়তে থাকে সরকারে ওপর।

Link copied!