• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

৫ মাসে ৩শ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে স্বল্পমেয়াদী বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২৩, ০৩:৩৫ পিএম
৫ মাসে ৩শ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে স্বল্পমেয়াদী বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ
ফাইল ছবি

ব্যবসায়ীদের চাপ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুদ হার বৃদ্ধির কারণে বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদী বৈদেশিক ঋণের সুদ ব্যায় অভূতপূর্ব পর্যায়ে পৌঁছেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ঋণের সুদ ও মূল পরিশোধের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪.১৫ বিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে মূল পরিশোধ হয়েছে ১৩.৮৪ মিলিয়ন এবং সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৩০৮ মিলিয়ন ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, ২০২২ সালে মূল পরিশোধ করা হয়েছিলো মাত্র ২৪৬ মিলিয়ন ডলার। এতে দেখা যায়, আগের বছরগুলোতে সুদ পরিশোধের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম ছিলো।

ব্যাংকাররা জানান, এই স্বল্পমেয়াদী ঋণের জন্য ৮ শতাংশের বেশি সুদ পরিশোধ করতে হয়।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মানুযায়ী, বৈদেশিক ঋণের জন্য সর্বোচ্চ সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (এসওএফআর)সহ তিন শতাংশ সুদ প্রদান করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে এসওএফআর ৫ শতাংশের ওপরে দাঁড়িয়েছে, যা একসময় ছিলো ১ শতাংশেরও কম।

তাই আন্তর্জাতিক বাজারে সুদের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ঋণের সুদ পরিশোধের পরিমাণও বেড়ে গেছে। উপরন্তু বিদেশি ব্যাংকগুলো বিভিন্ন চার্জ আরোপ করেছে; এতে করে সুদ বাবদ সামগ্রিক ব্যয় আরো বেড়ে গেছে বলে জানান ব্যাংকাররা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের আগের মাসগুলোর তুলনায় মে মাসে বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো মোট ঋণ পেয়েছে ২.৮৩ বিলিয়ন ডলার এবং পরিশোধ করেছে ২.৭৪ বিলিয়ন ডলার।

জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ১১.৩৮ বিলিয়ন ডলার নতুন ঋণ গৃহীত হয়েছে; একই সময়ে ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে ১৪.১৫ বিলিয়ন ডলার। মে মাসে বেড়েছে বেসরকারি স্বল্পমেয়াদী বৈদেশিক ঋণ।

জানা গেছে, বিদেশি ব্যাংকগুলোর ক্রেডিট সীমা বৃদ্ধি এবং দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ডলারের ঘাটতির কারণে প্রাইভেট সেক্টরের স্বল্পমেয়াদী বৈদেশিক ঋণ ২০০ মিলিয়ন ডলার বেড়েছে। যদিও আগের চার মাসে এই পরিমাণ ছিলো আরো কম।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মে শেষে বেসরকারি খাতে বকেয়া স্বল্পমেয়াদী বৈদেশিক ঋণ ১৪.০৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের মাসে ছিল ১৩.৮৭ বিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে, বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা বলেন, নভেম্বর ডিসেম্বরের কাছাকাছি সময়ে বিদেশি ব্যাংকগুলো তাদের ক্রেডিট লিমিট কমিয়েছে। এরফলে ক্রেতাদের ঋণ এবং বিলম্বিত পেমেন্টসহ সব ধরনের স্বল্পমেয়াদী ট্রেড ক্রেডিট হ্রাস পেয়েছে।

এছাড়া, সামনের দিনগুলিতে মুদ্রার মান আরো কমতে পারে এই আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা ঋণ পরিশোধে আরো বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন বলে জানা যায়। যদিও এই প্রবণতা এখন কমে এসছে, কারণ ব্যবসায়ীরা এখন আগের চেয়ে বেশি ঋণ পেতে চাইছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে গত ডিসেম্বরের শেষে ডলার প্রতি গড় বিনিময় হার বেড়ে ৯৯ টাকায় দাঁড়ায়। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিলো ৮৫.৮০ টাকা। বর্তমানে এই বিনিময় হার ১০৯ টাকায় পৌঁছেছে, অর্থাত গত ৫ মাসে মুদ্রার মান কমেছে ১০ শতাংশেরও বেশি।

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “তারা বিদেশি ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি (লেটার অফ ক্রেডিট) খুলতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন।

ব্যাংকগুলো দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় মুদ্রায় এলসি খোলার ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করে রেখেছে। কিন্তু যখন এই লিমিট নির্ধারণ করা হয়েছিল, তখন ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৪-৮৫ টাকা। বর্তমানে, ডলার রেট ১০৯ টাকায় দাঁড়িয়েছে; এ কারণ টাকাকে ডলারে রূপান্তর করার ফলে ডলারে আমাদের এলসি লিমিট কমে গেছে,"

 

Link copied!