• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

‘পেঁয়াজের দাম বাড়ান আড়তদার ও পাইকাররা’


বিজন কুমার
প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৩, ০৯:৪৪ পিএম
‘পেঁয়াজের দাম বাড়ান আড়তদার ও পাইকাররা’
ফাইল ছবি

ভারতে পেঁয়াজের ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের খবরে বেসামাল হয়ে উঠেছে দেশের পেঁয়াজের বাজার। নতুন শুল্ক আরোপের পর পেঁয়াজ দেশের বাজারে না এলেও কেজিতে দাম বেড়েছিল ১০ থেকে ১৫ টাকা। পরে আমদানি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় দাম কেজিতে কমে যায় ৪ থেকে ৫ টাকা। যা ক্রেতার কাছে এখনো  সহনীয় নয়। এমন পরিস্থিতিতে ক্রেতার প্রশ্ন, “তাহলে কে বাড়িয়েছে পেঁয়াজের দাম?” তবে আমদানি-রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ান পাইকার ও আড়তদাররাই।

বুধবার (২৩ আগস্ট) কারওয়ান বাজারে অনেক ক্রেতাই এই প্রশ্ন করেন। এদিন বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা পর্যন্ত। এর আগে শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে পেঁয়াজের ওপর শুল্ক আরোপের খরবটি প্রকাশিত হয়। পরদিন রোববার (২০ আগস্ট) পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয় ৬২ থেকে ৭০ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয় ৭০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত। আর শুক্রবার (১৮ আগস্ট) ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৫০ থেকে ৫৪ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। মূল্য বৃদ্ধির এই ওঠানামায় ক্রেতার প্রশ্নের উত্তর নেই ব্যবসায়ীদের কাছে। জানতে চাইলে পাইকারি আর আমদানিকারকরা দুষছেন একে অন্যকে।

ওয়ালিয়ুর রহমান নামের এক ব্যক্তি বলেন, “বাজারে কোনো জিনিসের দাম থেমে নেই। সব ধরনের জিনিসের দাম বেশি। ভারতীয় পেঁয়াজে ৪০ শতাংশ শুল্ক বাড়িয়েছে, মানলাম। কিন্তু সেই পেঁয়াজ তো বাজারে এখনো আসেনি। তা ছাড়া দেশে অনেক পেঁয়াজ আছে। তাহলে এই পেঁয়াজের দাম কে বাড়াচ্ছে? সরকারের কাছে এটাই প্রশ্ন।”

রাশেদা নামে এক নারী ক্রেতা বলেন, “পেঁয়াজের দামটা আমাদের কাছে অনেক বেশি। যেখানে এক কেজি পেঁয়াজ কিনতাম। সেখানে এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) পেঁয়াজ কিনতে হয়।”

সাহাদাৎ হোসেন নামের এক বিক্রেতা বলেন, “পেঁয়াজের বাজারে এক লাফে দাম বাড়ছে ১৫ টাকা। কিন্তু কমে যাওয়ার বেলায় কমছে ৫ টাকা, যা মানুষের উপকারে আসবে না। বাজারে অনেক পেঁয়াজ দেখতে পাই। ব্যবসায়ীরা বলে পেঁয়াজ নাই। পেঁয়াজের সিন্ডিকেটে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হচ্ছে।”

বাজারে কে বাড়াচ্ছে পেঁয়াজের দাম? এমন প্রশ্নের উত্তরে মানিক মিয়া নামের এক পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা বলেন, “ভারতীয় পেঁয়াজ এখন বাজারে আসেনি। তবে ভারতীয় পেঁয়াজের বাজার মনে হয় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসতেছে। কেজিতে ৫ টাকা কমছে। কিন্তু দেশি পেঁয়াজের দাম এখন বেশি। বড় বড় ব্যবসায়ীরা তো ধান্দা নিয়ে থাকে। সেই ধান্দায় দাম বাড়িয়েছে।”

রাজিব নামে এক পাইকারি বিক্রেতা বলেন, “ভারতে যখন শুল্ক বাড়ানোর খবর প্রকাশ হলো, তখন রাতারাতি দাম বেড়ে গেছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। শুল্ক আরোপকৃত পেঁয়াজ এখনো বাজারে আসেনি। তবে হ্যাঁ, যখন শুল্ক আরোপের খবর প্রকাশ হয়েছে, তখন বড় বড় আমদানিকারকরা পেঁয়াজ গুদামে রেখে দিয়েছেন। যে কারণে বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।”

এ বিষয়ে কথা হয় হিলি আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, “হিলি স্থলবন্দরে দিনের পেঁয়াজ দিনে বিক্রি হয়। মজুতের সুযোগ নেই। শনিবার বিকেলের দিকে ভারতের শুল্ক বাড়ানোর খবর আসে। ততক্ষণে এখানকার পেঁয়াজ বিক্রি শেষ। পরদিন ছিল রোববার। ভারতের আমদানি বন্ধ। কিন্তু দেখা গেছে শনিবারের খবরে রোববারেই দাম বেড়ে গেছে। তাহলে আমদানিকারকরা কীভাবে দাম বাড়াবে? তারা তো মজুত রাখে না। পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়তদার এরাই দাম বাড়ায়।”

Link copied!