দেশীয় পর্যবেক্ষকদের জন্য ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা-২০২৫’ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন নীতিমালার মূল লক্ষ্য হলো নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং ভোটারের আস্থা বাড়ানো।
নীতিমালা অনুযায়ী, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে অংশ নেওয়া সংস্থা ও ব্যক্তিদের জন্য নির্দিষ্ট যোগ্যতা, সীমাবদ্ধতা ও দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংস্থার নিবন্ধন ও যোগ্যতা
নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোকে নিবন্ধনের জন্য দৈনিক পত্রিকায় ১৫ দিন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে। আবেদন করতে হলে সংস্থার নিবন্ধিত গঠনতন্ত্র, নির্ধারিত ফরম ও অন্যান্য প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, শুধুমাত্র গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করা সংস্থাই আবেদন করতে পারবে। তবে যারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত বা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রাখে, তাদের সংস্থা নিবন্ধন পাবে না।
উল্লেখযোগ্যভাবে, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের নামের মিল থাকা সংস্থা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে, যার জন্য নিবন্ধন বাতিল করা যেতে পারে। তবে লিখিত অনুমতি থাকলে বিবেচনা করা হবে।
নিবন্ধনের মেয়াদ ও প্রতিবেদন
প্রত্যেক সংস্থার নিবন্ধন ৫ বছরের জন্য বৈধ থাকবে। মেয়াদ শেষে সংস্থাগুলো নির্দিষ্ট শর্তে নবায়ন করতে পারবে। নিবন্ধন প্রাপ্ত সংস্থাগুলোকে পরবর্তী ৫ বছরে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চারটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এছাড়া দ্বি-বার্ষিক প্রতিবেদনও কমিশনে দাখিল করতে হবে।
পর্যবেক্ষকের যোগ্যতা ও দায়িত্ব
নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক, ২১ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী এবং ন্যূনতম এইচএসসি বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে। তারা কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না এবং রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনো সম্পর্কও থাকতে পারবে না।
পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন চলাকালীন উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানা বা সংসদীয় এলাকা ভিত্তিক মোতায়েন হবেন। নির্বাচনের আগের দিন, নির্বাচনের দিন ও পরের দিন (মোট ৩ দিন) পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চালাতে হবে।
নিবন্ধন বাতিলের প্রক্রিয়া
নীতিমালা লঙ্ঘন বা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে সংস্থা যুক্ত থাকার অভিযোগ পেলে কমিশন ১০ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব চেয়ে নোটিশ পাঠাবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে বা অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংস্থার নিবন্ধন চূড়ান্তভাবে বাতিল করা হবে।
নতুন নীতিমালার মাধ্যমে ইসি আশা করছে যে, দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো দায়িত্বশীলভাবে কাজ করবে এবং আগামী নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।






























