রাজধানীর বিমানবন্দর থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ই-অরেঞ্জ’র প্রধান হোতা ও সিইও আমান উল্লাহ চৌধুরীর ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমেদ এই আদেশ দেন।
এর আগে শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেল হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিদেশ যাওয়ার পথে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বিমানবন্দর থানার ওসি তাসলিমা বলেন, “আমান উল্লাহকে বিমানবন্দর এলাকা থেকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রয়েছে।”
জানা গেছে, আমান আল্লাহকে প্রতারণার মামলায় ২০২১ সালে ১৮ আগস্ট গুলশান থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। তখন ই-অরেঞ্জের মালিক গুলশান থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা ভারতে পালিয়ে যায়। সোহেল রানার বোন সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী মাসুকুর রহমানসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন আদালত। সেই সময় এই সোনিয়া মেহজাবিন ও মাসুকুর রহমানের বিরুদ্ধে ই-কমার্সের নামে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ই-অরেঞ্জের ‘প্রতারণার শিকার’ মো. তাহেরুল ইসলাম নামের এক গ্রাহক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে আদালত কারাগারে পাঠায়। সেই মামলারও আসামি এই আমান উল্লাহ।
এ ছাড়া ই-অরেঞ্জ নামের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দেশের কয়েক হাজার গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা করে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেন আমান উল্লাহ চৌধুরী। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মোট ৫৪টি মামলা দেশের বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হয়েছে। তিনি একাধিকবার জেল খেটেছেন, পরে জামিনে মুক্ত হয়ে পলাতক ছিলেন। গণ-অভ্যুত্থানকালীন সময় থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির বাইরে চলে যান।
সূত্রে জানা, আমান উল্লাহ শুধু প্রতারণা চক্রের নেতা নন, তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অর্থ যোগানদাতা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত। ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান চলাকালীন তিনি ঢাকা মহানগর ও জেলা আওয়ামী যুবলীগ এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের অর্থায়ন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।