চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে রেলওয়ে অস্থায়ী শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। এর কিছুক্ষণ পর আটকে থাকা বেশ কয়েকটি ট্রেন তাদের যাত্রা শুরু করে। এরপরে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার পর অবস্থানরত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যায় পুলিশ। এসময় কয়েকজন শ্রমিককে আটক করা হয়।
এর আগে সকাল ১০টায় রাজধানীর মালিবাগ এলাকার রেললাইনে অস্থায়ী শ্রমিকরা অবস্থান কর্মসূচি গ্রহণ করেন। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকরা যদিও বলছেন, তিন বছর পর চাকরি স্থানীয়করণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বলছেন, ভিন্ন কথা।
শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচিতে কথা হয় লিপি আরা নামে এক নারীর সঙ্গে। তিনি ওয়েটিং বেয়ারা হিসেবে দিনাজপুরে কাজ করেন। তিনি বলেন, “আমি তিন বছর থেকে চাকরি করছি। চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে এখন পর্যন্ত তিনবার এসেছি। কিন্তু এসেও কোনো লাভ হচ্ছে না। শুধু ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। চাকরি সরকারি হওয়ার আশ্বাস আমাদের দেওয়া হলেও পরবর্তীতে বলা হয়, চাকরি ডিসেম্বর থেকে আর নেই। এখন আমাদের আউটসোর্সিং দেখানো হচ্ছে।”
শারমিন নামের আরেক শ্রমিক বলেন, “তিন বছর পর চাকরি স্থায়ীকরণ করার কথা বলা হলেও এখনো তা হচ্ছে না। আমি ২০১৭ সালে চাকরি শুরু করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার চাকরি স্থানীয়করণ হয়নি। দাবি পূরণ না হলে আমাদের ওপর দিয়ে ট্রেন নিয়ে যেতে হবে।”
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল বিভাগীয় উপপুলিশ কমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, “আমরা রেলওয়ে পুলিশকে সহযোগীতার জন্য এসেছিলাম। শ্রমিকদের কর্মসূচির কারণে রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল। তাদের সরে যাওয়ার জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একাধিকবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং বারবার সময় দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ তাদের বলেছে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে। কিন্তু তারা এতে কর্ণপাত করেননি। কর্মসূচির কারণে জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে রেলওয়ে পুলিশ তাদের সময় বেঁধে দেয়। ন্যূনতম শক্তি প্রয়োগে তাদের উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।”
ঢাকা রেলওয়ের বিভাগীয় প্রধান শফিকুর রহমান বলেন, “গত জুন পর্যন্ত তাদের চাকরি মেয়াদ ছিল। রেল কর্তৃপক্ষ তাদের চাকরি বাজেট ডিসেম্বর পর্যন্ত করে দিয়েছে। এই অনুপাতে তারা চাকরি করছে। এখন তারা চাকরি পাবে কিনা? এটা বিধিবদ্ধ বিষয়। ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা অস্থায়ী শ্রমিক। এরপরে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে।”