শ্রমিকদের মজুরির পাশাপাশি জীবনের দামও কম বলে জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেছেন, “আমাদের দেশে শ্রমিকের শ্রমমূল্য কম বিধায় বিভিন্ন দেশ থেকে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা হয়। বলা হয় যে মজুরি কম। কিন্তু এই মজুরি কমের পাশাপাশি শ্রমিকদের জীবনের দামও কম। তাদের নিরাপদ কর্মস্থলের যে দাবি, আমরা সেটা প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি।”
শনিবার (৮ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘হাসেম ফুডস কারখানায় শ্রমিক হত্যার দুই বছর’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, “প্রতিদিনই পত্রিকা খুললে দেখা যায় যে নির্মাণশ্রমিকরা কাজ করতে গিয়ে ৬-৭তলা থেকে পড়ে মারা যাচ্ছেন। সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন। নিরাপত্তার অভাবে বিভিন্ন সময়ে প্রায় তিন হাজার শ্রমিক মারা গেছেন।”
তিনি বলেন, “একটা সময় আমরা বিদেশি চাপে শিশুশ্রম বাদ দিয়েছিলাম। গার্মেন্টস সেক্টরে সেটা বাদ দেওয়া গেলেও অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিশুশ্রম এখনো বন্ধ হয়নি। কারণ এটা আমাদের শ্রম আইনের দুর্বলতা। শ্রম আইনকে সংশোধন করতে গিয়ে তাকে কঠিন বানিয়ে ফেলেছি।”
মেনন বলেন, “যে ২৩ দফা দাবি নিয়ে আমরা সরকার গঠন করেছিলাম, সেখানে শ্রম আইন আরও উন্নতকরণের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তার প্রতিফলন আমরা দেখছি না। যখনই আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কান চেপে ধরে, তখন আমরা কিছু বলার চেষ্টা করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমাদের শ্রমিক আন্দোলনগুলো সে কান চেপে ধরে না। তার বড় কারণ হলো শ্রমিক আন্দোলন এখন আর দেশের ওপর নির্ভর করে না, সেটা নির্ভর করে বিদেশিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। দেশে এতগুলো গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান থাকার পরও শ্রমিক হত্যার বিরুদ্ধে কাউকে কথা বলতে দেখা যায় না। যারা মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে যুক্ত, তারা হয়ত প্রতিবাদ করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “শ্রমিকদের মধ্যে ঐক্য না থাকলে শ্রমিক আন্দোলনে কখনো সফলতা পাওয়া যাবে না। অন্যের ভরসায় নয়, বরং নিজেদের পায়ে দাঁড়িয়েই শ্রমিকদের আন্দোলন করতে হবে এবং দাবি আদায় করতে হবে।”


































