হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালনের সময় এক অঙ্গীভূত আনসার সদস্যের পোশাকের ভেতরে লুকানো অবস্থায় পুরোনো মডেলের ১৫টি বাটন মোবাইল ফোন উদ্ধার হওয়ায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কার ও কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
ঘটনাটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিলেও বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, এটি একটি ‘বিচ্ছিন্ন অনৈতিক ঘটনা’, যা পুরো বাহিনীর ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে না।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাহিনীর উপপরিচালক ও গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. আশিকউজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পরই সংশ্লিষ্ট সদস্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, বাহিনী থেকে বহিষ্কার ও কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।’
তিনি বলেন, ‘বাহিনী জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। বাহিনীর শৃঙ্খলাবিরোধী বা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত যেকোনো সদস্যের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ও কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অঙ্গীভূত সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিশেষ করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন। সীমিত সুযোগ-সুবিধা, দীর্ঘ কর্মঘণ্টা ও প্রতিকূল পরিবেশেও তারা দিনরাত পরিশ্রম করে যাত্রীসেবা ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করে চলেছেন।
বাহিনীর বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আনসার সদস্যরা অবৈধ চোরাচালান প্রতিরোধ, মানবপাচার রোধ, ও অবৈধ পণ্য উদ্ধারসহ জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। বিশেষ করে গত ১৮ অক্টোবর বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাহিনীর ২৫ জন সদস্য আহত হলেও তারা অগ্নিনির্বাপণে অসীম সাহস ও আত্মত্যাগের নজির স্থাপন করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘একজন সদস্যের অনৈতিক আচরণের দায় পুরো বাহিনীর ঘাড়ে চাপানো অনুচিত ও অযৌক্তিক। এটি একটি একান্ত বিচ্ছিন্ন ঘটনা। বাহিনীর আদর্শ, পেশাদারিত্ব ও নিবেদন অটুট আছে এবং থাকবে। বাহিনী বিশ্বাস করে, দেশের সচেতন নাগরিক সমাজ তাদের পাশে থাকবে- যাতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী আরও শক্তিশালী, সুশৃঙ্খল ও জনগণের প্রত্যাশিত পেশাদার বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।’
দেশ ও জনগণের সেবায় বাহিনীর সদস্যরা সর্বদা নিবেদিত—এই প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেছে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী।
সংস্থাটির দাবী, বিমানবন্দরে দায়িত্বে থাকা এক আনসার সদস্যের কাছ থেকে মোবাইল উদ্ধারের ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বাহিনী বলছে, এটি একটি একক ঘটনা—যা কোনোভাবেই পুরো আনসার বাহিনীর পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে না।
উল্লেখ্য, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালনের সময় কার্গো ভিলেজে আগুন লাগা ভবনের ভেতর ভস্মীভূত দ্রব্যের মাঝে থাকা কিছু বাটন ফোন লুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ওই আনসার সদস্য। এ সময় তিনি ঘটনাস্থলেই মোবাইল ফোনসহ ধরা পড়েন। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে শৃঙ্খলাভঙ্গজনিত অপরাধে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে চাকরি থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়।
































