অবশেষে সেই বাংলাদেশি পর্ন তারকা যুগল সিআইডির হাতে ধরা পড়ল। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসিম উদ্দিন।
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘ওই দম্পতি বিদেশি একটি ওয়েবসাইটে নিয়মিত পর্ন কনটেন্ট আপলোড করতেন। তাদের পরিচালিত চ্যানেলটি বিশ্বের জনপ্রিয় পর্ন সাইটগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে উঠে আসে।’ এর আগে, ওই দম্পতির বিরুদ্ধে দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নসাইটে সক্রিয় থাকার অভিযোগ ওঠে। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের ‘মডেল’ বলে পরিচয় দিতেন। বিশ্বের অন্যতম বড় ওয়েবসাইটে নিয়মিত পর্ন ভিডিও প্রকাশ করে আলোচনায় আসেন ওই দম্পতি ।
আন্তর্জাতিক পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করা সেই পর্ন তারকা দম্পতি বৃষ্টি ও আজিমকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে তাদের বান্দরবান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসিম উদ্দিন খান।
জসিম উদ্দিন খান বলেন, বৃষ্টি ও আজিমকে বান্দরবান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা এখনো পথে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, পরবর্তীতে জানানো হবে।
এ রআগে গত ১৭ অক্টোবর দ্য ডিসেন্টের একটি অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনের পর আলোচনায় আসে এই যুগল। প্রতিবেদনটিতে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছিল, কীভাবে এক বাংলাদেশি দম্পতি এডাল্ট ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করেন এবং তাদের কর্মকাণ্ড কীভাবে তরুণ প্রজন্মকে এই খাতে আকৃষ্ট করছে। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর দেশজুড়ে বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এডাল্ট ওয়েবসাইটগুলোর একটিতে ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসের ১৬ তারিখ পর্যন্ত বৃষ্টি বিশ্বব্যাপী পারফর্মারদের মধ্যে প্রথম দিকে রয়েছেন।
তার প্রথম ভিডিওটি আপলোড করেন ২০২৪ সালের ১৭ মে তারিখে। চলতি অক্টোবরের মাঝামাঝি পর্যন্ত তিনি মোট ১১২টি ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যা একত্রে ২৬৭ মিলিয়নের বেশি ভিউ পেয়েছে।
পর্ন ওয়েবসাইটগুলো যেসব বাংলাদেশি নারী পারফর্মার রয়েছেন, তারা তাদের পরিচয় ও চেহারা গোপন রাখলেও আজিম তার ভিডিওতে মুখ উন্মুক্ত রাখেন এবং তার সঙ্গী বৃষ্টিও তার সঙ্গে একত্রে পর্ন ভিডিওতে হাজির হন।
আজিম ও বৃষ্টি কেবল একটি প্ল্যাটফর্মেই সীমাবদ্ধ নন; তাদের ভিডিওগুলো একাধিক আন্তর্জাতিক পর্ন ওয়েবসাইটে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। তারা নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলোকে খুবই পরিকল্পিতভাবে তাদের কনটেন্ট প্রচারের জন্য ব্যবহার করেন।
দ্য ডিসেন্ট অক্টোবরের প্রথম দুই সপ্তাহে বিভিন্ন ফেসবুক পেজে অন্তত ৫০টি পোস্ট তালিকাভুক্ত করেছে, যেখানে বি এবং এ-এর পর্নোগ্রাফিক ভিডিওগুলো নানাভাবে প্রচার করা হচ্ছে। তবে এসব পেজ তারা নিজেরা পরিচালনা করেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বাংলাদেশের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে অনুযায়ী, পর্নোগ্রাফি উৎপাদন ও বিতরণ একটি ফৌজদারি অপরাধ। এই যুগল শুধু নিজেরাই অপরাধই করছে না, বরং অন্যদেরও এই পথে যুক্ত হতে উৎসাহিত করছেন, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে বসে পর্ন ভিডিও বানানো এবং প্রচারের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে উঠছে।