• ঢাকা
  • সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫, ৪ কার্তিক ১৪৩২, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

ছাত্রী পছন্দ করতো জুবায়েদকে, তাই প্রেমিক ক্ষোভে হত্যা করে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৫, ১০:২৪ এএম
ছাত্রী পছন্দ করতো জুবায়েদকে, তাই প্রেমিক ক্ষোভে হত্যা করে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইনের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রেমঘটিত জটিলতার চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্যই পুলিশকে জানিয়েছেন অভিযুক্ত ওই ছাত্রী। জানা গেছে, দীর্ঘদিনের প্রেমিক মাহির রহমানের প্রতি ক্ষোভ ও ভুল বোঝাবুঝি থেকেই হত্যার পরিকল্পনা করে প্রেমিক ও তার বন্ধুরা। তবে পুরো হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষা অজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

সোমবার সকালে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বর্ষা জানান—তার প্রেমিক মাহিরের সঙ্গে ৯ বছরের সম্পর্ক ছিল, কিন্তু সম্প্রতি তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। সেই বিরোধের মধ্যেই বর্ষা মাহিরকে জানান যে, তিনি তার প্রাইভেট শিক্ষক জোবায়েদকে পছন্দ করেন।

ওসি বলেন, বর্ষার এই একতরফা পছন্দের কথা শুনে মাহির ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং রাগে-ক্ষোভে বন্ধুদের সঙ্গে মিলে জোবায়েদকে হত্যা করে। তবে জোবায়েদের সঙ্গে বর্ষার প্রেম বা ঘনিষ্ঠতার কোনো প্রমাণ মেলেনি। ফোনালাপ বা মেসেজে সম্পর্কের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, জোবায়েদ প্রায় এক বছর ধরে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার রৌশান ভিলায় বসবাসরত বর্ষাকে পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন। তার বাবা গিয়াসউদ্দিনের অনুমতিক্রমেই প্রাইভেট পড়াতেন তিনি।

গত রোববার বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে বর্ষাদের বাসার তিনতলায় খুন হন জোবায়েদ হোসাইন। বাসার সিঁড়িতে রক্তের দাগ ছড়িয়ে ছিল নিচতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত। সিঁড়ির ওপর উপুড় হয়ে থাকা অবস্থায় জোবায়েদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনার পর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং তাতীবাজার মোড় অবরোধ করে খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। রাতেই অভিযুক্ত বর্ষাকে নিজ বাসা থেকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।

ওসি আরও জানান, জিজ্ঞাসাবাদের সময় বর্ষাকে খুবই স্বাভাবিক মনে হয়েছে। তার মধ্যে কোনো নার্ভাসনেস বা অনুশোচনার ছাপ ছিল না। বরং পুরো সময় সে চিন্তামুক্ত ও ঠান্ডা মেজাজে ছিল।

জোবায়েদ হোসাইন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। একইসঙ্গে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের সভাপতি এবং জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

গত এক বছর ধরে জোবায়েদ হোসাইন আরমানিটোলার ১৫, নুরবক্স লেনে রৌশান ভিলায় বর্ষাকে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান পড়াতেন। বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।

পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, তাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মাহির রহমান ও তার বন্ধুকে সন্দেহ করা হলেও, তদন্তের অগ্রগতির ওপর নির্ভর করে আরও নাম সামনে আসতে পারে। জোবায়েদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জোবায়েদ খুনের মামলা হয়নি। গ্রেপ্তারও হয়নি মাহির রহমান ও তার বন্ধু। তবে পুলিশ বলছে, অভিযান চলছে।

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!