যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনার তৃতীয় ধাপের প্রথম দিন শেষ হয়েছে। বৈঠকে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ওপর আরোপিত ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কমানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সবুজ সংকেত মিলেছে। তবে কোন স্তরে কমবে, সে আলোচনা এখনো হয়নি। আলোচনার আরও দুই দিন বাকি।
বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। সঙ্গে রয়েছেন—জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান এবং অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাওসার চৌধুরী। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউএসটিআরের সহকারী ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ ব্রেন্ডন লিঞ্চ। আলোচনার সমন্বয় করছে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের দূতাবাস।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে বাংলাদেশ সময় বুধবার ভোরে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের ওপর যে পাল্টা শুল্ক আছে, তা কমবে। এ বিষয়ে ইউএসটিআর (ইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ বা বাণিজ্য প্রতিনিধি) কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আমরা ইঙ্গিত পেয়েছি। তবে ঠিক কতটা কমবে, সেটা এখনো বলা যাচ্ছে না। আলোচনার বাকি অংশ এখনো সামনে।’
এর আগে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার সময় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মর্তুজা জানান, ‘আলোচনা এখনো চলছে। আলোচনায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে। বেশির ভাগ বিষয়েই যুক্তরাষ্ট্র একমত হয়েছে, কিন্তু আরও দুই দিন বাকি। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’
তবে আলোচনার আগে থেকেই বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বড় পরিসরের আমদানির উদ্যোগ নেয়। সরকারি পর্যায়ে আগামী এক বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেড় বিলিয়ন ডলারের গম, ডাল এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
জি-টু-জি ভিত্তিতে অর্থাৎ, সরকারি পর্যায়ে ৭ লাখ টন গম কেনার চুক্তি ইতিমধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং আরও ২ দশমিক ২০ লাখ টনের প্রস্তাব অনুমোদিত। এলএনজি আমদানির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার কথাও ভাবছে সরকার।
এই সরকারি পরিকল্পনার পাশাপাশি বেসরকারি খাত থেকেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ১ দশমিক ৫ থেকে ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেলসহ শীর্ষ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান—টিকে গ্রুপ, মেঘনা ও সিটি গ্রুপের প্রতিনিধিরা মার্কিন রপ্তানিকারকদের সঙ্গে ক্রয়চুক্তির আলোচনায় অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন।
বাণিজ্যসচিব জানিয়েছেন, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের এই মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত আমদানি বাড়তে পারে। তবে এই পরিকল্পনার পুরোটা এখনো আলোচনার পর্যায়ে।
 
                
              
 
																 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    




























