• ঢাকা
  • বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩০, ২৫ রমজান ১৪৪৬

‘১৮-এর নিচে সবাই শিশু, ভাবনার সময় এসেছে’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১, ০৪:৫২ পিএম
‘১৮-এর নিচে সবাই শিশু, ভাবনার সময় এসেছে’

১৮ বছরের নিচে সবাইকে শিশু হিসেবে বিবেচনা করার বিষয়টি নিয়ে এখন চিন্তা-ভাবনার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মধুবাগে বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

কিশোর অপরাধ দমনে জনসচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের আওতায় ‘সবার হোক একটাই পণ, কিশোর অপরাধ করবো দমন’ শীর্ষক টিভিসি উদ্বোধন উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমি যখন এসএসসি পাস করেছি তখন বয়স ছিল ১৫ বছর। বর্তমানে যারা নিয়মিত পড়াশোনা করে ১৮ বছর বয়সে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যায়। আমাদের মনে হয় ১৮ বছরের এ সময়সীমা চিন্তা-ভাবনা করার সময় এসেছে। আন্তর্জাতিক একটি আইনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় সমন্বয় করে এটি করা হয়েছে।”

কিন্তু এর ফলে কিশোর অপরাধ দমনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বেগ পেতে হচ্ছে, তাই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবনার কথা বলেন মন্ত্রী।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে, এটি ধরে রাখার প্রথম শর্ত হচ্ছে নিরাপত্তা। কিন্তু আমাদের কিশোররা নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। আমাদের শঙ্কার বিষয় ছিল করোনাকালীন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে, সবাই বসে থাকবে। তবে এ সময়ে কিশোরদের নিয়ে যে শঙ্কাটা ছিল ততখানি হয়নি, আমাদের দেশ অনেক দেশের তুলনায় ভালো আছে।”

এছাড়া বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেন, “একসময় আট বছর পর্যন্ত বয়সীদের শিশু ধরা হতো। কিন্তু পরবর্তীতে কিশোর আইন হালনাগাদ করা হয়েছে, এখন ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু ধরা হয়। আইন পরিবর্তনের ফলে যখন একজন পূর্ণ যুবকের পর্যায়ে পৌঁছে যায় তাকেও শিশু ধরা হয়। এর ফলে কিশোর অপরাধের বিরুদ্ধে আমরা যেভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি, সেভাবে করা হচ্ছে না। তাদের ক্ষেত্রে বিচার পদ্ধতি, গ্রেপ্তার পদ্ধতি সবকিছুই আলাদা। তাদের গ্রেপ্তারের সঙ্গে সঙ্গে প্রফেশন অফিসারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আইজিপি আরও বলেন, “প্রফেশন অফিসাররা কাজ করেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায়, আর আমরা কাজ করি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতায়। আমরা তাদের সঙ্গে সমন্বয়ের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এছাড়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রফেশন অফিসার না থাকার বিষয়টিও রয়েছে। বললেই সেই সংখ্যক কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে দেওয়া যায় না, এটি দীর্ঘমেয়াদী একটা প্রক্রিয়া।”

কিশোর অপরাধীদের গ্রেপ্তারের পর জেলে পাঠানো যাবে না, সংশোধনগারে পাঠাতে হয়। সেই সংশোধনাগারের সংখ্যাও পর্যাপ্ত নয়। যেসব গ্যাপ রয়েছে পূর্ণ করতে কাজ করতে হবে। নয়তো বাড়বাড়ন্ত কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করা কঠোর হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক।

পুলিশ প্রধান বলেন, “কিশোর ছেলে-মেয়েরা কী করছে, কোথায় যাচ্ছে এখানে প্যারেন্টাল কন্ট্রোলের বিষয়টাও রয়েছে। প্রতিটা পরিবারকে খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চারা কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে এবং কী করছে। দেশ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে। সে দেশের উপযোগী একটা জেনারেশন আমাদেরই তৈরি করতে হবে।”

এছাড়াও র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে ছোটদের সঙ্গে বড়রাও থাকে। ছোট-বড় মিলে বিরোধ হয়, পরে আলাদা গ্রুপ সৃষ্টি হয়। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারির মতো ঘটনা ঘটে। কিশোর অপরাধ দমনে সচেতনতা কার্যক্রম শুরু হয়েছে মানে এ নয়, আভিযানিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। যদি কেউ সচেতনতার মাধ্যমে সুপথে না আসে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা চলমান থাকবে।”


 

Link copied!