বর্ষা শেষ হতে না হতেই শীতের একটা আভাস ইতোমধ্যেই আমরা অনুভব করছি। দিনের শুরু আর রাতের শেষের দিকে তো এখন বেশ ঠান্ডা লাগে। তবে শীতের আগমন মূলত মনে করিয়ে দিচ্ছে শহরের বিপণীবিতানগুলো। দোকানগুলোতে চলে এসেছে বাহারি সব শীতের পোশাক। ক্রেতারাও আগেভাগেই সংগ্রহ করে নিচ্ছে তাদের কাঙ্ক্ষিত গরম জামা।
এবারের পোশাকের বাজারে দেখা যাচ্ছে বৈচিত্র্য। শুধু ডিজাইনে নয়, কাট-ছাঁটেও এসেছে পরিবর্তন। প্রতিবছরই দোকানিরা ক্রেতাদের চাহিদামতো পোশাক সরবরাহ করে থাকেন। এ বছরও তার বিকল্প হবে না। দোকানগুলো দেশি-বিদেশি নানা ধরনের শীতের পোশাক চোখে পড়ছে। দোকানিরাও বেশ আগ্রহের সঙ্গে তাদের দোকান সাজাচ্ছেন শীতের পোশাকে।
তরুণ-তরুণীরাই মূলত নিজেদের পছন্দমতো পোশাক কিনতে থাকে অতিব্যস্ত। এর মধ্যে বাদ যায় না শীতের পোশাকও। তাদের শীতের ফ্যাশনে পোশাকে ভিন্নতা রাখে। শীতের পোশাক কেনার সময় দৈহিক গড়ন, উচ্চতা, ব্যক্তিত্ব ও নিজস্বতা এই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হয়। সময়ের সঙ্গে চলা মানে এটা নয় যে আপনি এমন কিছু পরবেন, যা আপনার ব্যক্তিত্বকে ক্ষুন্ন করে। সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গে শীতের পোশাক কেনার সময় আরামের বিষয়টি মাথায় রাখবেন।
মেয়েদের শীতের পোশাকের মধ্যে আছে শাল, জ্যাকেট এবং সোয়েটারের পাশাপাশি জিপারসহ হুডি জ্যাকেট, লং-জ্যাকেট, হাতকাটা হুডি সোয়েটার, হাইনেক-সোয়েটার, কালারফুল লং-সোয়েটার এবং বিভিন্ন রকম মাফলার আর স্কার্ফ। সঙ্গে থাকছে বিভিন্ন স্টাইলের এবং রঙের টুপি। বিশেষ করে গলাবন্ধ মাফলার ও স্কার্ফগুলো বেশ ফ্যাশনেবল করে তৈরি করছেন কারিগররা। জ্যাকেট আর সোয়েটারের কাটিংয়ে আনা হচ্ছে নতুন ডিজাইন।
তরুণদের শীতের পোশাকে জনপ্রিয় জ্যাকেট। তরুণরা জ্যাকেট এ উষ্ণতার সঙ্গে মাথায় রাখছে ব্র্যান্ড। কালারের মধ্যে চলছে সবুজ, নীল, ধূসর, মেরুন, ব্রাউন ইত্যাদি। এছাড়া বিভিন্ন রঙের মিশ্রণ ও দেখা যাচ্ছে। ডিজাইনের মধ্যে চলছে হাই নেক ও হুডি জ্যাকেট। এছাড়া চলছে হাফ ও ফুল স্লিভ সোয়েটার।
শিশুদের শীতের পোশাকে যোগ করা হয়েছে নানা ধরনের ফুল, লতাপাতা, কার্টুন, প্রজাপতি, তারার মোটিফ। শিশুদের পোশাকে সাধারণত আরামদায়কতার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হয়। তাই পোশাকের কাপড় হয় নরম যা শিশুর শরীরে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া করে না। পোশাকের মধ্যে রয়েছে সোয়েটার ও জ্যাকেট। জিন্সের জ্যাকেটও দেখা যাচ্ছে বাচ্চাদের শীতের পোশাকের তালিকায়। শিশুদের যেহেতু কালারফুল পোশাকে বেশি মানায় তাই তাদের পোশাকে উজ্জ্বল রং যেমন লাল, গোলাপি, নীল, হলুদ ইত্যাদি রং প্রাধান্য পাচ্ছে।
নিউ মার্কেট, নুরজাহান মার্কেট, ঢাকা কলেজ-সবচেয়ে ব্যস্ততম মার্কেট। এসব মার্কেটে এবং এলাকার আশপাশে ক্রেতারা উপযোগী পোশাক পেয়ে যাবে। গুলিস্তান, বঙ্গবাজারেও ভালো মানের শীতের পোশাক পাবেন।
জ্যাকেট, হুডি প্রতিটি ৩০০-৭০০ টাকা। হাটা কাটা সোয়েটার ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, ফুলহাতা সোয়েটার ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা। ছেলেমেয়েদের শাল প্রতিটি ৩০০ টাকার মধ্যে পাবেন। মাফলারের দাম ১০০ থেকে ২৫০ টাকা। স্কার্ফ ১৫০-২৫০ টাকা। টুপি প্রতিটির মূল্য ৮০ থেকে ২০০ টাকা। মেয়েদের পাজামা ও জেগিংস ১৫০-২৫০ টাকা। আরও ভালো ডিজাইনের ছেলে ও মেয়েদের চাদর ১২০ থেকে ৪ হাজার টাকা। স্কার্ফ ১৫০-৪০০ টাকা। মাফলার ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা। মেয়েদের জেগিংস ২০০ থেকে ৪০০ টাকা।
বসুন্ধরা শপিং মল এবং যমুনা ফিউচার পার্কে শীতের পোশাকের কিছুটা মূল্য বেশি। তবে এখানকার পোশাক অন্যান্য পোশাকের ডিজাইনের তুলনায় আলাদা। তাই একটু বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়। সোয়েটারে মূল্য ৭০০ থেকে ৩০০০ টাকা। ছেলেদের জ্যাকেট ২০০০ থেকে ১৫০০০ টাকা। ছেলে ও মেয়েদের শাল বা চাদরের মূল্য ১৫০০ থেকে ২০০০০ টাকা। স্কার্ফের দাম ৪৫০ থেকে ১৫০০ টাকা।