যেকোনো কিছুই যত্ন করতে হয়। গাছ যেমন যত্নে বড় হয়, তেমনই সম্পর্কও যত্নে রাখতে হয়। অনেক সময় সম্পর্কগুলো প্রত্যাশার পারদ ছুঁতে পারে না। সঙ্গীর কাছে চাওয়া পাওয়ার ভেদাভেদটা বেড়ে যায়। একঘেয়েমী আর অযত্নে ধীরে ধীরে সেই সম্পর্ক মুখ থুবড়ে পড়ে। এরপরই সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং নষ্ট হতে পারে বহুদিনের সম্পর্ক।
সুন্দর সম্পর্ক সুস্থ মানসিকতায় অন্যতম ভূমিকা রাখে। সঙ্গীর সঙ্গে বোঝাপড়া যত ভালো, ততই সুন্দর হবে সম্পর্ক। বিয়ের পর দুজনের মতের মিল, পছন্দের মিল, প্রতিশ্রুতি রক্ষা, বিশ্বাস আর ভরসা দিয়ে সম্পর্কের যত্ন করতে হয়। এরমধ্যে কিছু ভুলের কারণে হয়তো সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। একসঙ্গে পথচলা সঙ্গীর পথটাও ভিন্ন হয়ে যায়। বিচ্ছেদ কিংবা ডিভোর্সের মতো পরিস্থিতিরও সম্মুখীন হতে হয়।
ঘন ঘন ঝগড়া হওয়া
সম্পর্কের মধ্যে বোঝাপড়া কমে গেলে ঝগড়া লেগেই থাকে। কিন্তু ঘন ঘন ঝগড়া হওয়া সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। একসঙ্গে থাকতে গেলে ঝগড়া হওয়া স্বাভাবিক। এই খুনসুটি বা ঝগড়ার সীমা অতিক্রম করা ঠিক না। ঘরের চার দেয়ালের বাইরে ঝগড়া চলে গেলে তা সম্পর্ককে নষ্ট করতে পারে। জীবনের মিষ্টতা হারিয়ে যায়। ঘন ঘন ঝগড়ায় এক ধরনের তিক্ততা তৈরি হয়। একে অপরকে আর সহ্যও হয় না। দুজনের মধ্যে ভালো লাগা নষ্ট হয়ে যায়। তাই অতিরিক্ত ঝগড়া হওয়ার আগেই সাবধান হোন। ঝগড়ার পর ভালোবাসা বাড়ে, কিন্তু অতিরিক্ত ঝগড়ার কারণে ভালোবাসা কমে যায়। তাই অনেক সম্পর্কই বিচ্ছেদের দিকে এগিয়ে যায়।
সমস্যার সমাধান না হওয়া
সমস্যার সমাধান ঠিক সময়েই করতে হবে। নয়তো জীবনে অমীমাংসিত সমস্যা আরও বড় হয়ে দাড়াবে। নিত্যদিনের জীবনে অনেক সমস্যাই সামনে আসে। এমনো সমস্যা থাকে যার সঙ্গে আমরা পরিচিতি নই। সঙ্গীর সঙ্গে এমন সমস্যায় পড়লে তা শুধরে নিতে হবে। সমাধান করতে হবে চটজলদি। কারণ আপাতদৃষ্টিতে অমীমাংসিত সমস্যা বড় মনে না হলেও পরবর্তী সময়ে তা বিরাট হয়ে দাড়ায়। মিষ্টিমধুর প্রেম বা বিয়ের সম্পর্কে এর প্রভাব নেতিবাচক। অপছন্দের বিষয় বা আচরণ নিজের মধ্যে রেখে দেওয়া হলেও সমস্যা বাড়ে। তাই এমন সমস্যার সমাধান আগেই করে নিন।
বিরক্তিকর মনোভাব
সঙ্গীর প্রতি সবসময় বিরক্তিকর মনোভাবও সম্পর্ক নষ্ট করার অন্যতম কারণ হতে পারে। সমস্যার সমাধান না হলে সঙ্গীর প্রতি ক্ষোভ থেকে যায়। যা থেকে বিরক্তিকর মনোভাব হতেই পারে। ভালো লাগার মানুষটির ছোটখাটো বিষয়ও বিরক্ত লাগতে শুরু হয়। এমন মনোভাব ক্রমশ ছড়িয়ে যায় সঙ্গীর মনেও। দুজন বিরক্ত মানুষ সম্পর্ক বেশিদূর নিয়ে যেতে পারে না। শুরু হয় অভিযোগ, অনুযোগ আর কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি। এক সময় বিচ্ছেদে হাটে সম্পর্ক।
যোগাযোগের অভাব
যোগাযোগ যেমন ভালোবাসা বাড়ায়, যোগাযোগ না হলে ভালোবাসা কমেও যায়। যেকোনো সম্পর্কের সাফল্যের অন্যতম উপায় যোগাযোগ ঠিক রাখা। মনের কথা সঙ্গীর সঙ্গে ভাগ করলে সম্পর্কের সেতু দৃঢ় হয়। যোগাযোগ কম হলে দূরত্ব বেড়ে যায়। বিচ্ছেদের পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাই উভয় পক্ষকেই যোগাযোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। রাগ ধরে রাখা যাবে না। কথা বন্ধ করা যাবে না। রাগ করে অন্য কোথাও চলে যাওয়া ঠিক হবে না। এতে বিচ্ছেদ ঘটতে পারে।
আবেগের অপূর্ণতা
সঙ্গীর কাছে কী আশা করছেন? সঙ্গীর মনের কথা, আবেগ বুঝতে হবে। টাকা-পয়সা, সম্মান, কাজের মর্যাদার বাইরে আবেগের গুরুত্ব দিতে হবে। ছোট ছোট আবেগকে এড়িয়ে গেলে চলবে না। মন খারাপের সময় কিংবা কষ্টের সময়টাতে পাশে থাকতে হবে। সবকাজের জন্য সময় থাকলেও সঙ্গীকে সময় দেওয়া হয় না। এটাও সম্পর্কে দূরত্ব বাড়ায়। একসঙ্গে সময় কাটানো, বিশ্বস্ততা ও নির্ভরতার একটি সম্পর্ক গড়তে হবে। মনে রাখতে হবে, চাহিদা ও যোগানের মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি। নয়তো বিচ্ছেদই শেষ পরিণতি হতে পারে।
সূত্র: সাইকোলজি টুডে
                
              
																
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    






































