• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ভারতে ‘এইচ৩এন২’ ভাইরাসে দুজনের মৃত্যু


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৩, ০৪:৩০ পিএম
ভারতে ‘এইচ৩এন২’ ভাইরাসে দুজনের মৃত্যু

ভারতের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে দুই মাস ধরে করোনাভাইরাসের মতো উপসর্গ নিয়ে বহু মানুষ ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা’ ভাইরাসের উপধরন এইচ৩এন২ এ আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটিতে এবার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুজন ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানিয়েছে সরকার। যা পুরো ভারতজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।

শুক্রবার (১০ মার্চ) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এইচ৩এন২ দ্বারা সৃষ্ট ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে হরিয়ানা ও কর্ণাটকে দুজন মারা গিয়েছে। কর্ণাটকের ৮২ বছর বয়সী হাসান এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী প্রথম ব্যক্তি। আর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হিরে গৌড়া নামে আরেক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তিনি ১ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। হিরে গৌড়া ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন।

এনডিটিভি বলছে, পুরো ভারতজুড়ে এইচ৩এন২ ভাইরাসে ৯০ জন এবং এইচ১এন১ ভাইরাসে আটজন আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে।

গত কয়েক মাস ধরেই দেশটিতে এ ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তি সংখ্যা বাড়ছে। বেশির ভাগ সংক্রমণ হয়েছে এইচ৩এন২ ভাইরাস দ্বারা। এটি ‘হংকং ফ্লু’ নামেও পরিচিত। এতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা জ্বর, সর্দি, কাশি এবং শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। এনডিটিভিসহ ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে।

দ্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) এর জন্য ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের একটি উপধরণ এইচ৩এন২ কে দায়ী করেছে। এতে আক্রান্ত হয়ে অনেক মানুষকে হাসপাতালে পর্যন্ত ভর্তি হতে হয়েছে। এর রোগের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে ক্রমাগত কাশি, সঙ্গে জ্বর। অনেকে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকা এবং শরীরে এসব উপসর্গ থেকে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

গত দুই বা তিন মাসে এই ভাইরাসটি ভারতজুড়ে বিস্তৃত আকারে ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

ইন্ডিয়া টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দ্য ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ বলছে, ইনফ্লুয়েঞ্জার অন্য ধরনগুলোর থেকে এই উপধরনের কারণে অধিক মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়। এইচ৩এন২ ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৯২ শতাংশ জ্বর, ৮৬ শতাংশ কাশি, ২৭ শতাংশ শ্বাসকষ্ট, ১৬ শতাংশ ঘ্রানজনিত সমস্যায় ভুগছেন।

তাদের পর্যবেক্ষণে আরও দেখা গেছে, এদের মধ্যে ১৬ শতাংশ রোগীর নিউমোনিয়া এবং ৬ শতাংশের খিঁচুনি রোগ হয়েছে। এছাড়া ১০ শতাংশ রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন পড়েছে এবং ৭ শতাংশকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) নেওয়া হয়েছে।

কেউ কেউ ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে দ্রুত সুস্থ হতে ইচ্ছামত অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছেন। ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) থেকে সর্দি-জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত হলেই অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনকি সংস্থাটি থেকে চিকিৎসকদেরও ব্যবস্থাপত্রে রোগীদের যথেচ্ছা অ্যান্টিবায়োটিক না দিয়ে বরং উপসর্গ দেখে ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আইএমএ-র পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা ইতোমধ্যে কোভিডের সময় অ্যাজিথ্রোমাইসিন এবং আইভারমেকটিন এর ব্যাপক ব্যবহার দেখেছি। যা মানুষের প্রাকৃতিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায় প্রভাব ফেলেছে। তাই অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণের আগে সংক্রমণটি ব্যাকটেরিয়াজনিত নাকি ভাইরাসজনিত তা আগে নির্ণয় করা প্রয়োজন। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যকর, ভাইরাসজনিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে নয়।”

স্থানীয় একটি হাসপাতালের চিকিৎসক অনুরাগ মেহোত্রা বলেন, “আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুস্থ হতে সময় লাগছে। রোগীদের দেহে কঠোর উপসর্গ দেখা দেয় এবং দীর্ঘদিন ধরে রোগের উপসর্গ থাকে। এমনকি রোগী সুস্থ হয়ে উঠার পরও অনেক দিন পর্যন্ত রোগের উপসর্গ তার শরীরে থেকে যায়।”

Link copied!