• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সংকট মোকাবিলায় ৩ বিলিয়ন ডলার পাচ্ছে শ্রীলঙ্কা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৩, ০২:১৩ পিএম
সংকট মোকাবিলায় ৩ বিলিয়ন ডলার পাচ্ছে শ্রীলঙ্কা

মহামারির কারণে পর্যটন খাত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি বড় ধাক্কা খায়। বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য চড়া সুদে নেওয়া বিদেশি ঋণ তখন হয়ে ওঠে গলার কাঁটা। ফলে স্বাধীনতালাভের পর প্রথমবারের মতো ২০২১ সালে চরম অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হতে হয় দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কাকে।

সংকট মোকাবিলায় দীর্ঘ এক বছর আলোচনার পর অবশেষে আইএমএফের কাছ থেকে তিন বিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার জন্য সমঝোতায় পৌঁছাতে পেরেছে দেশটি।

শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী সাবরি বিবিসিকে বলেছেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠন এবং বিমান পরিবহন সংস্থার বেসরকারীকরণের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছে সরকার। তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, এই সংকট উত্তরণে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে শ্রীলঙ্কাকে।

বিবিসি বলছে, বিদেশি মুদ্রার অভাবে জ্বালানি, খাদ্য, ওষুধসহ জরুরি পণ্যের আমদানিও বন্ধ হয়ে যায় একপর্যায়ে। মূল্যস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।

ওষুধ, জ্বালানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের ঘাটতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে গেলে দেশব্যাপী বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। জনগণকে শান্ত রাখতে শ্রীলঙ্কা সরকার কর কমিয়ে দিয়েছিল, তাতে হিতে বিপরীত হয়, রাজস্ব আদায় কমে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায়। এ পরিস্থিতিতে তুমুল জনরোষের মুখে ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কায় সরকারের পতন ঘটে। ওই বছরই মে মাসে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঋণখেলাপি হয় শ্রীলঙ্কা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাবরি বলেন, “কোনো কিছুই আমাদের সাধ্যের মধ্যে নেই। আমাদের ভালো না লাগলেও এখন কঠিন কিছু পদক্ষেপ নিতে হতে পারে, যেগুলো খুবই অজনপ্রিয় হবে। সৌভাগ্যবশত, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত ইউনিয়নগুলো ছাড়া দেশের অধিকাংশ মানুষ পরিস্থিতিটা বুঝতে পেরেছে। আমি জানি তারা খুশি নয়, কিন্তু তারা এটাও বোঝে যে আমাদের কোনো বিকল্প নেই।”

রাজস্ব আদায় বাড়াতে এ বছরের শুরুর দিকে শ্রীলঙ্কা পেশাজীবীদের ওপর আয়কর আরোপ করেছে, সেই করের হার ক্ষেত্রবিশেষে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত। জ্বালানি, খাদ্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানির খরচ মেটানোর জন্য অন্যান্য করও বাড়ানো হয়েছে।

স্বাধীনতার পর সবচেয়ে খারাপ সময়টা পার করতে থাকা শ্রীলঙ্কা এমনিতেই বিপুল ঋণের ভারে জর্জরিত। কিন্তু বিদেশি মুদ্রার সংকটে করুণ দশার মধ্যে আইএমএফের ওই ঋণ দেশটির ‘টিকে থাকার সহায়’ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর আগে গত বছরে জুন মাসে শ্রীলঙ্কা ঋণদাতার বর্ধিত তহবিল সুবিধার (ইএফএফ) মাধ্যমে কমপক্ষে তিন বিলিয়ন ঋণ নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনা করে আসছিল। এ ধরনের ঋণ প্রকল্পগুলো সাধারণত তিন বছর স্থায়ী হয়। একবার পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়ে গেলে ঋণ ফেরত দেওয়া শুরু করতে হয়। তবে শ্রীলঙ্কা আইএমএফের কাছে যে তিন বিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি করতে যাচ্ছে তা আইএমএফের সঙ্গে দেশটির নির্ধারিত ঋণ কোটার প্রায় চার গুণ বেশি।

Link copied!