• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারতে যে অঞ্চলে ফিলিস্তিন-ইরানের পক্ষে প্রতিদিন চলছে বিক্ষোভ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৪, ০৪:২৫ পিএম
ভারতে যে অঞ্চলে ফিলিস্তিন-ইরানের পক্ষে প্রতিদিন চলছে বিক্ষোভ
খামেনির পোস্টার হাতে রাজপথে নামছেন শত শত মানুষ। ছবি: বিবিসি।

মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হতে পারে, এমন আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়ে আসছে। ঠিক এমন মুহূর্তে ইরানের সমর্থনে ভারতে প্রতিদিন খামেনির পোস্টার হাতে রাজপথে নামছেন মানুষ। তারা ইরানের পক্ষে, হিজবুল্লাহার হয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন।

মিছিল আর বিক্ষোভের দৃশ্য দেখে বাইরে থেকে আসা কেউ ভুল করে ভেবে বসেন, এটা ভারত নাকি ইরান! তবে প্রতিদিনই এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে চীন ও পাকিস্তান সীমান্তঘেঁষা লাদাখের কার্গিলে। যেখানে আজ থেকে ২৫ বছর আগের এক গ্রীষ্মে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মারাত্মক লড়াই হয়েছিল। যা নিয়ে সিনেমাও তৈরি হয়েছে।

ভারতীয়রা সাধারণত ইসরায়েলের গোঁড়া সমর্থক বলে পরিচিত। ভারতের বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও সংবাদমাধ্যমও লাগাতার ইসরায়েল-ঘেঁষা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এমন দৃষ্টিভঙ্গির দেশটিতে লাদাখের কার্গিল যেন একেবারেই ভিন্নরকম। একেবারে অদ্ভুত ব্যতিক্রম।

কার্গিল জেলার মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই শিয়া মুসলিম। আর ইরানের সঙ্গে তাদের সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও আত্মিক যোগাযোগ খুব গভীর। ফলে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে তারা যে ইরানের সমর্থনে রাস্তায় নেমেছেন ও নিয়মিত সভা-সমাবেশ করছেন, সেই ঘটনার রয়েছে গভীর পটভূমি। এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা।

কারগিল শহরে ঘুরতে গেলে চোখে পড়ে ইরানের প্রতি বাসিন্দাদের সমর্থনের চিত্র। শহরটির কেন্দ্রস্থলে ব্যস্ততম মোড়ের নাম ‘খামেনি চক’। আবার সবচেয়ে বড় সমাবেশস্থলের নাম ‘হুসেইনি পার্ক’। কিছুদিন আগে ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় শহরের দেওয়াল পর্যন্ত ছেয়ে ছিল ‘ফেভারিট’ রাইসির পোস্টারে।

মাস কয়েক আগে সেই ইব্রাহিম রাইসি যখন হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হলেন, তাকে শেষ বিদায় জানাতেও কার্গিল চোখের জলে পথে নেমেছিল। শোকের কালো পোশাক পরে হাজার হাজার শিয়া নারী-পুরুষ ‘লাবাইক ইয়া খামেনি’ ধ্বনিতে মুখর করে তুলেছিলেন শহরের আকাশ-বাতাস।

ভারতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বহু শিয়া মুসলিম। প্রকৃতপক্ষে ইরানের বাইরে বিশ্বের যে দেশে সবচেয়ে বেশি শিয়া বসবাস করেন সেটি হলো ভারত। সংখ্যায় তারা মোট তিন থেকে চার কোটির মতো হবেন বলে ধারণা করা হয়। ইরান তথা ইরানের বিপ্লবের আদর্শের প্রতি সংহতি জানাতে কার্গিলের শিয়ারা কখনই দ্বিধা বা সঙ্কোচে ভোগেনি। পাশাপাশি ভারতের প্রতি তাদের ‘দেশপ্রেম’ নিয়েও কেউ প্রশ্ন তোলার সুযোগ পায়নি।

তবে বিগত কয়েক দশকে ভারত ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠতা, বাণিজ্যিক বা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা যত বেড়েছে, ততই ভারতের অধিকাংশ মানুষ মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে খোলাখুলি ইসরায়েলকে সমর্থন জানাচ্ছেন। তবে এতকিছুর পরেও কার্গিলের বাসিন্দারা ইসরায়েলের বিরোধিতায় কখনও আপোষ করেনি। শুধু ইরান নয়– তারা গাজার ফিলিস্তিনিদের হয়েও নিয়মিত পথে নেমেছেন, আওয়াজ তুলছেন।

Link copied!