• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

যৌন নির্যাতনের ঝুঁকিতে মরক্কোর ভূমিকম্প আক্রান্ত শিশুরা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩, ০৫:৩৩ পিএম
যৌন নির্যাতনের ঝুঁকিতে মরক্কোর ভূমিকম্প আক্রান্ত শিশুরা
ছবি: সংগৃহীত

মরক্কোতে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পরে কম বয়সী মেয়েদের বিয়ে ও অন্যান্য ধরণের শোষণের প্রচার করে দেশটির পুরুষররা ইন্টারনেটে পোস্ট করছেন। এই ধরনের বার্তা নিয়ে নারী অধিকার কর্মী ও সংস্থাগুলো উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৮ সেপ্টেম্বর মরক্কোর আটলাস পর্বতমালায় আঘাত হানা ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে এক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি, কথিতভাবে যিনি একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করছেন, ১০ বছরের একটি অল্পবয়সী মেয়ের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন। সেই ব্যক্তি তার ইনস্টাগ্রামে নিজের ও সেই বাচ্চার ছবিটি দিয়ে ক্যাপশনে লিখেছেন, “সে আমার সঙ্গে (ক্যাসাব্লাঙ্কায়) আসতে চায় না। তবে সে ফিসফিস করে বলেছিল যে সে যখন বড় হবে তখন আমরা বিয়ে করব।”

ফেসবুকের আরেকটি জনপ্রিয় পেইজ ‘শহুরে মেয়েদের’ তিরস্কার করছে। সেই পেইজের এক পোস্টে বলা হয়, “আপনি কেন এমন কাউকে বিয়ে করবেন যিনি এখনও উন্মুক্ত ও আঁটসাঁট পোশাক পরতে চান, প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে চান, আপনার বাচ্চাদের অনুপযুক্তভাবে বড় করতে চান।” সেখানে পুরুষদের ‘যে মেয়েরা কিছু চাইবে না’ তাদের বিয়ে করার আহ্বান জানানো হয়।

ইয়াসমিনা বেনসলিমানে, একজন মরক্কোর অধিকারকর্মী ও রাজনীতিতে লিঙ্গ সমতা প্রচারকারী একটি অলাভজনক সংস্থা পলিটিক্সফরহার-এর প্রতিষ্ঠাতা আল জাজিরাকে বলেন, “(পুরুষরা) এই মেয়েদের গিয়ে বিয়ে করার কথা বলেছে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ (তাদের) ব্যাখ্যাকে ধর্মের ন্যায্যতা দিচ্ছে… এমনকি তারা অপ্রাপ্তবয়স্ক হলেও, (তারা বলে) আমরা তাদের রক্ষা করব।”

বেনসলিমানে ও অন্যান্য মরক্কোর নারী অধিকার কর্মীরা ভূমিকম্পের পরপরই মাসিকের যত্নের গুরুত্বের জন্য জোর দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। তারা জানতে পারেন মরোক্কান পুরুষরা তরুণীদের ‘বাঁচাতে’ প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

চলতি সপ্তাহে একজন ব্যক্তিকে এই ধরনের বিষয়বস্তু প্রচারের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইরাচিডিয়া শহরের এক ২০ বছর বয়সী ছাত্র ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত অঞ্চলে ভ্রমণ করে মেয়েদের যৌন হয়রানি করা নিয়ে অনলাইনে গর্ব করেছিলেন।

বেনসলিমানে ও তার সংস্থা ভূমিকম্পের পর একটি লিঙ্গ-সংবেদনশীল ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য অনুরোধ করেছেন৷ তারা এখন এমন কার্যক্রমের আহ্বান জানিয়ে একটি ইশতেহার প্রকাশ করেছেন।

বেনসলিমানে বলেন, “আমরা জানতাম যে এরকম কিছু ঘটবে, লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার ঝুঁকি থাকবে, শোষণের ঝুঁকি থাকবে এবং আমরা অনলাইনে এসব উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটতেই দেখেছি।”

তিনি আরও বলেন, দুর্যোগে ত্রাণের জন্য একটি লিঙ্গ-সংবেদনশীল পদ্ধতি থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। (ইউএন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম) অনুসারে, দুর্যোগের সময় পুরুষদের তুলনায় নারী ও মেয়েরা ১৪ গুণ বেশি মারা যায়।”

Link copied!