জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সরব ছিলেন ঢালিউডের । নেমেছিলেন রাজপথে। বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থার সমালোচনা করতেও পিছু হটেননি। ফলে নানা ধরণের শুনতে হয় এই অভিনেত্রীকে।
শুরুতে ভারতের ‘র’, তারপর যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিআইএ’, এরপর ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা ‘মোসাদ’! বাঁধনের দাবি এই তিন গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করা হয় তাকে। তিনি আসলে কোন গোয়েন্দা সংস্থার চর হিসেবে কাজ করছেন?
রোববার (২৫ মে) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে আক্ষেপ করেছেন অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সরব এই অভিনেত্রীকে হঠাৎ নিরব হয়ে পড়তে দেখা গেছে। ফেসবুকে তিনি লিখেছিলেন, ‘কী মর্মান্তিকভাবে নষ্ট হলো এক ঐতিহাসিক সুযোগ! আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম একটি ভালো, ন্যায়ের ওপর গড়া দেশ, যেখানে থাকবে সততা, থাকবে আশার আলো। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন চূর্ণবিচূর্ণ।’
তারই ধারাবাহিকতা পাওয়া তার আজকের পোস্টেও। বাঁধন লিখেছেন, ‘২০২১ সালে আমি একজন গর্বিত ‘র’ এজেন্ট ছিলাম। তখন প্রিয় অভিনেত্রী টাবুর সঙ্গে বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত বলিউড সিনেমা ‘খুফিয়া’য় অভিনয় করেছিলাম। কিন্তু পরে অবস্থা গেল বদলে। আমি ছবির প্রিমিয়ারেও যোগ দিতে পারিনি। কেন? কারণ ভারতীয় হাইকমিশন আমার ভিসা প্রত্যাখ্যান করেছিল। একবার নয়, পাঁচবার।’
ভারতের ভিসা বাতিল হওয়ার কারণ হিসেবে বাঁধন লিখেছেন, ‘তাদের সাথে আমার দুটি সাক্ষাৎকার হয়। সেসময় মনে হলো তারা আমার একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট নিয়ে খুব চিন্তিত। ইউএস অ্যাম্বেসির প্রোগ্রামে ভিপি নূরের সাথে একটি ছবি।’ পরে ভিসা পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে উল্লেখ করে বাধন জানান, ‘আমাকে অনেক কানেকশন ব্যবহার করতে হয়েছিল- নিজের দেশের প্রভাবশালী মানুষদের কাছাকাছি থাকার সুবিধার্থে, কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে হাস্যজ্জল ছবির কারণে অবশেষে আমি এক মাসের সিঙ্গেল-এন্ট্রি ভিসা পেলাম।’
ভিসা না পাওয়া নিয়েও কোনো এক অভিনেত্রীকেও দূষেছেন বাঁধন। তিনি লিখেছেন, ‘দুটি প্রভাবশালী সূত্রে জেনেছি, একজন গুরুত্বপূর্ণ অভিনেত্রী আমার ভিসা সমস্যার পেছনে কলকাঠি নেড়ে থাকতে পারেন, কে জানে। এটা আমার কথা না। এ কারণে, আমি বলিউড ও কলকাতায় বেশ কিছু বড় সুযোগ হারিয়েছি। যদিও অপেক্ষা করছি এখনও- আমার যাত্রা এখানেই শেষ নয়!’
নিজের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থার চর হিসেবে কাজ করার অভিযোগ প্রসঙ্গে বাঁধন এই পোস্টে লেখেন, ‘জুলাই বিদ্রোহের সময় বলা হয়েছিল ‘সিআইএ’ এজেন্ট, ‘ঐতিহাসিক বিপ্লব’-এর সঙ্গে থাকার জন্য মার্কিন দাতা সংস্থা ইউএসএআইডির কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। তারপর এলো জামাত এজেন্টের তকমা, শুধু তাদের একজন নেতার একটি ভিডিও আমার পেজে শেয়ার করেছিলাম বলে।
কেউ কেউ এমন দাবিও করেছেন যে, আমি মোসাদের হয়েও কাজ করছি নিশ্চয়ই! আর গত রাতেই আমি আবার ‘র’-এর এজেন্ট হয়ে গেছি! বর্তমান সরকারের ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু আমাকে বেশ গম্ভীরভাবেই জিজ্ঞেস করলো ‘টাকা খাইছো?’ কি এক সমাজে আমরা বাস করি! যারা নিঃশর্তভাবে নিজের দেশকে ভালোবাসে না, তারা ভাবে অন্য কেউও সেটা করে না।’