• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

মৃত্যুর আগে যা ঘটেছিল সাদির সঙ্গে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৪, ০৩:৩৭ পিএম
মৃত্যুর আগে যা ঘটেছিল সাদির সঙ্গে
সাদি মহম্মদ। ছবিঃ সংগৃহীত

কিংবদন্তি রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী, শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক সাদি মহম্মদের মৃত্যুতে শোকাহত সাংস্কৃতিক অঙ্গন। তার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন ছোট ভাই প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ।

বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় নিজ ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সংগীতশিল্পীর মরদেহ। শিবলী নিজেই প্রথমে ঘরের দরজা ভেঙে ভাইয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। যে মুহূর্ত কোনোভাবেই ভুলতে পারছেন না তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) সাংবাদিকদের শিবলী মহম্মদ বলেন, ‘আমার ভাই মনে কষ্ট নিয়ে চলে গেছে। সে মনে করত, তাকে মূল্যায়ন করা হয়নি। কত মানুষ কত পদক পাচ্ছে, এসব তাকে খুব ভাবাত। সে বড্ড অভিমানী ছিল। আমরা তাকে বুঝাতাম, আমাদেরকে মানুষ ভালোবাসে। পদক দিয়ে কী হবে? কিন্তু তার মনে চাপা কষ্ট ছিল। সেই কষ্ট নিয়েই চলে গেল।’

বুধবার সন্ধ্যার পরের ঘটনা বর্ণনা করে এই নৃত্যশিল্পী বলেন, ‘ইফতার করে ভাই নিজের রুমে গিয়ে গানের রিহার্সেল করছিল। এরপর তার সহকারীকে বলেছে, তুমি বাইরে যাও আমি রিহার্সেল শেষ করে ফোন করলে এসো। তখন আমি তার রুমের সামনে গিয়ে দেখতে পাই ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। যেটা আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়। কারণ, তিনি কখনোই রুমের দরজা বন্ধ করেন না রিহার্সেলের সময়। এরপর কড়া নাড়লেও ভেতর থেকে কোনো শব্দ মেলে না। পরে আমি বলি দরজা ভাঙো। দরজা ভেঙে ভেতরে যে দৃশ্য আমি দেখলাম....।’

শিবলী মহম্মদ বলেন, ‘আমার ভাই রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি পেলে একটু তৃপ্তি পেত। সাদি মহম্মদ তো আমার বড়, তার সামনে যখন আমি একুশে পদক পাই সেটা ছিল আমার জন্য বিব্রতকর। আমি ভাইকে বলি, একুশে পদক নিব না। কিন্তু সে আমাকে বলে, কেন নিবি না? তুই তো নাচের জন্য বাংলাদেশে কম কিছু করিস নি। পরে তাকে যখন একুশে পদক অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য কার্ড দিলাম, সে বললো- না থাক রে। তুই যা। আমি সেখানে যাব না। গেলে অনেকেই প্রশ্ন করবে, আমি কেনো পদক পাই না। এগুলো আমাদেরকে বিব্রত করবে।’

এর আগে সাদি মহম্মদের ব্যক্তিগত সহকারী সোহেল মাহমুদ জানান, বুধবার সন্ধ্যায় বেগুনি ও মুড়ি দিয়ে ইফতারি শেষে নিজ রুমে যান শিল্পী। বেশ কিছুক্ষণ রেয়াজ করেন তানপুরা দিয়ে। এরপর অনেক সময় চুপচাপ থাকায় রুমে ঢুকতে গিয়ে দেখেন দরজা বন্ধ। ডাকাডাকিতে সাড়া মিলছিলো না। পরে দরজা ভেঙে ঢুকে পরিবারের সদস্যরা দেখেন ঝুলন্ত অবস্থায় শিল্পীর নিথর দেহ।

সাদি মহম্মদ রবীন্দ্রসংগীতের ওপর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন। ২০০৭ সালে ‘আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে’ অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তার ‘শ্রাবণ আকাশে’ ও ২০১২ সালে তার ‘সার্থক জনম আমার’ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।

Link copied!