• ঢাকা
  • রবিবার, ০৩ আগস্ট, ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২, ৮ সফর ১৪৪৬

‘দেশবাসীর একতায় মন ছুঁয়ে গেছে’


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৪, ০২:১৩ পিএম
‘দেশবাসীর একতায় মন ছুঁয়ে গেছে’
সামিনা চৌধুরী। ছবি: কোলাজ

স্মরণকালের ভয়াবহতম বন্যায় কবলিত দেশ। ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, খাগড়াছড়িসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে আছে অর্ধকোটির বেশি মানুষ। জোয়ারে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। এই মানবিক বিপর্যয়ে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন দেশের সংগীতশিল্পী, চলচ্চিত্র ও নাটকের শিল্পীরাও। দেশবাসীর এমন একতায় মন ছুঁয়ে গেছে বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী সামিনা চৌধুরীর।

এই মুহূর্তে দেশে নেই জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পী। বন্যার্তদের অসহায়ত্ব দেখে মন কাঁদছে তারও। তবে এই কঠিন সময়ে দেশবাসীর একতা মন ছুঁয়ে গেছে গায়িকার। গণমাধ্যমকে সামিনা জানালেন, এমন বাংলাদেশই দেখতে চান সবসময়।

সংগীতশিল্পী সামিনা চৌধুরীর জন্মদিন (২৮ আগস্ট)। এই বিশেষ দিনে গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন এই সংগীতশিল্পী। সামিনা বলেন, ‘বন্যায় কবলিত মানুষদের ছবি দেখে, খবর দেখে খুব মন খারাপ। কতটা কষ্ট করছেন মানুষগুলো। কিন্তু একটা ব্যাপার সত্যিই ভালো লাগছে যে, সর্বস্তরের মানুষ এগিয়ে এসেছে। যা আমাকে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই, এটাই প্রমাণ হয়েছে আরও একবার। এখানে সব পেশার মানুষ বন্যার্তদের সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এ বাংলাদেশই আমরা দেখতে চাই সবসময়। দোয়া করি এ দুর্যোগ যেন দ্রুত নিরসন হয়।’

সামিনা চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে আমার স্বপ্ন একটাই। সব মানুষের মধ্যে নিয়ম, শৃঙ্খলা, সততা, পরিচ্ছন্নতা থাকবে। আর রাস্তাগুলো পরিষ্কার, জ্যামবিহীন হবে। আমি স্বপ্নে এ বাংলাদেশ কল্পনা করি।’

বন্যা পরিস্থিতিতে শিল্পীদের অবস্থান প্রসঙ্গে সামিনা বলেন, ‘গান এমন একটা বিষয় যা মানুষের মনের ব্যাপার। শিল্পী ও শ্রোতা উভয়েরই মনকে সতেজ করে গান। সেক্ষেত্রে এ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে গান হয় না। শিল্পীদের কাজ বন্ধ। অনেকেই কাজ করতে পারছে না। আন্দোলনের পরে সব সেক্টরে কাজ শুরু হলেও শিল্পীদের কাজ শুরু হয়নি ওভাবে। এখন আবার বন্যা। এর মধ্যে তো আর গান গাওয়া যায় না। মানুষ গান শোনার অবস্থায় নেই এখন, আর গাওয়ার মতো মানসিক অবস্থায়ও তো শিল্পীরা নেই। সবারই মন খারাপ, অসহায় মানুষদের চেহারা চোখের সামনে ভাসছে, তাদের অসহায়ত্ব, কষ্ট আমাদের হৃদয়ে নাড়া দিচ্ছে।’

সামিনা চৌধুরী ১৯৬৬ সালের এই দিনে দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা বিখ্যাত সংগীতব্যক্তিত্ব মাহমুদুন নবী। তাঁর বড় বোন ফাহমিদা নবী ও ছোট ভাই পঞ্চমও গানের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন। প্রতিবারের মতো এবারও পারিবারিকভাবেই নিজের জন্মদিন পালন করছেন বলে জানান এই গায়িকা। তবে বিশেষ এই দিনটি বিশেষ কোনো আয়োজন করে উদযাপনের অবস্থায় নেই তিনি। দেশের দুর্যোগকালীন সময়ে সবাই নিরাপদ ও সুন্দর থাকুক এই কামনাই করছেন বলে জানালেন।

সামিনা চৌধুরীর বেড়ে ওঠা ঢাকায়। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজে। চলচ্চিত্র ও আধুনিক গানের পাশাপাশি রবীন্দ্রসংগীতেও সামিনা চৌধুরী মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে সামিনার যাত্রা হয়েছিল ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’ চলচ্চিত্রের গানের মাধ্যমে। এরপর সিনেমার গানে নিয়মিত থেকেছেন তিনি। চলচ্চিত্রাঙ্গনে সামিনার জনপ্রিয় গানের মধ্যে ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘আমার গরুর গাড়িতে বউ সাজিয়ে’, ‘আমার মাঝে নেই এখন আমি’, ‘হও যদি ঐ নীল আকাশ’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

Link copied!