পর্দায় বারবার সাহসী ও খলনায়িকার চরিত্রে দেখা গেলেও বাস্তব জীবনে দীর্ঘদিন ধরে নীরব যন্ত্রণা বয়ে বেড়িয়েছেন বলিউড ও টেলিভিশনের পরিচিত মুখ দীপশিখা নাগপাল। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি খোলামেলা জানালেন নিজের লুকানো দুঃখ, লড়াই আর বেঁচে থাকার গল্প।
শৈশব থেকেই আত্মবিশ্বাসহীনতার সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন দীপশিখা। পরিবারে অবহেলা, মায়ের স্নেহ থেকে বঞ্চিত হওয়ার কষ্ট এবং পাতলা গড়নের জন্য কটূক্তি তাঁকে বারবার আঘাত করেছে। এতটাই হতাশা জন্মেছিল যে অনেক সময় মনে হতো—“আমি জন্মালাম কেন?”
অভিনয়জীবনের শুরুতে পরিবারকে খুশি রাখতেই বহু সুযোগ হাতছাড়া করেছেন তিনি। বড় পর্দায় কাজের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে ‘ভালো মেয়ে’ হয়েই থাকতে চেয়েছিলেন। তবে পরবর্তীতে সাহসী চরিত্রে কাজ শুরু করলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে ওঠে। পরিবার লজ্জিত হতো, এমনকি কাছের মানুষরাও উপহাস করত। তাঁর মেয়ে পর্যন্ত একসময় মায়ের সিনেমার সিডি ভেঙে ফেলেছিলেন।
দুই দাম্পত্য ভাঙনও জীবনে গভীর ছাপ ফেলে। মানসিক চাপে তিনি প্রায় ভেঙে পড়লেও কাজের জায়গায় কখনো তা প্রকাশ করেননি। দীপশিখার কথায়, “শুটিং সেটে আমি কাউকে বুঝতে দিইনি ভেতরে কী চলছে। কাজটাই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।”
আজও তিনি মনে করেন, ব্যক্তিগত জীবনের সব ঝড় সামলেও কাজের প্রতি সততা আর পেশাদারিত্ব তাঁকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। আর সেই কারণেই এখনো পর্দায় টিকে আছেন দীপশিখা নাগপাল—একজন সংগ্রামী অভিনেত্রী, যিনি পর্দার চরিত্রের মতোই বাস্তব জীবনে ছিলেন অনমনীয় যোদ্ধা।