বিশ্ব পপ সংগীতের বাদশা হিসেবে পরিচিত মাইকেল জ্যাকসন। তার গান শুনে আর ‘মুন ওয়াক’ দেখে মুগ্ধ হয়নি এমন লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। নাচ, গানের পাশাপাশি ফ্যাশনেও তিনি ছিলেন অনবদ্য। বিশ্বের সবচেয়ে বড় তারকা মাইকেল জ্যাকসন ১৯৫৮ সালের ২৯ আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা রাজ্যের গ্যারি নামে এক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
মারা যান ২০০৯ সালের ২৫ জুন। মাইকেল জ্যাকসনের জীবন ঘটনাবহুল। গানের জন্য তিনি যেমন প্রশংসিত হয়েছেন, সেই সঙ্গে সমালোচিত হয়েছেন ব্যক্তিগত নানা কর্মকাণ্ডের জন্য। তবে সমালোচনা করলেও মানুষ তাকে ঘৃণা করে ছুড়ে ফেলে দেয়নি। কীভাবেই-বা ছুড়ে ফেলে দেবে? তিনি যে নাচ, গানে ভক্তদের সব ভুলিয়ে দিতেন।
মাইকেল জ্যাকসনের জীবনের এমন কিছু ঘটনা আছে, যা মানুষের অজানা। তার অজানা বিষয় নিয়ে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই এখনো।
কষ্টের শৈশব
মাইকেল জ্যাকসনের শৈশব সুখের ছিল না। ছোটবেলায় বাবা-ভাইয়ের কাছে মার খেতেন। একটি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন এ কথা। তিনি আরও জানিয়েছিলেন, তাকে চাবুক দিয়ে মারা হতো।
পারিবারিক ব্যন্ডদল
১৯৬৫ সালে নিজের ভাইদের নিয়ে একটি ব্যান্ডদল গড়ে তুলেছিলেন মাইকেল জ্যাকসন। ব্যান্ড দলটির নাম ছিল ‘জ্যাকসন ব্রাদারস’। মাইকেল মাত্র পাঁচ বছর বয়সে প্রথম জনসম্মুখে গান করেন।
বিজ্ঞাপন
১৯৮৩ সালে প্রকাশ হওয়া ‘থ্রিলার’ মাইকেলের প্রথম হিট হওয়া অ্যালবাম। বিশ্বব্যাপী অ্যালবামটি ৬৫ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়।
বিখ্যাত মুন ওয়াক
প্রায় ৪৭ হাজার দর্শকের সামনে ১৯৮৩ সালে তিনি প্রথম ‘মুন ওয়াক’ কারিশমা দেখান। যা দর্শকদের বিমোহিত করে রাখে।
বিজ্ঞাপনের কারণে মুখাবয়ব পরিবর্তন
কোমল পানীয় কোম্পানি পেপসির সঙ্গে পাঁচ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয় জ্যাকসনের। পেপসির বিজ্ঞাপনের শুটিং করার সময় তিনি আহত হন। তার মুখ ঝলসে যায়। তারপর তিনি মুখের প্লাস্টিক সার্জারি করিয়ে মুখাবয়ব পরিবর্তন করে ফেলেন।
সর্বোচ্চ পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে তার নাম উঠেছে ২৩ বার, যার মধ্যে ১৪টি রেকর্ড এখনো টিকে আছে। পেয়েছেন ৪০টি বিলবোর্ড অ্যাওয়ার্ড, ১৩টি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড এবং ২৬টি আমেরিকান মিউজিক অ্যাওয়ার্ড। এসব অর্জন তাকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ডজয়ী শিল্পীর খেতাব দিয়েছে।
স্পাইডারম্যান হতে চেয়েছিলেন
মাইকেল জ্যাকসন বিখ্যাত মার্বেল সিরিজের স্পাইডারম্যান ছবি প্রযোজনা এবং অভিনয় করতে চেয়েছিলেন। যদিও তা আর সম্ভব হয়নি।
ক্যানসার ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা
জীবদ্দশায় নিজের অর্থায়নে লিউকেমিয়া ও ক্যানসার ইনস্টিটিউট স্থাপন করেন মাইকেল জ্যাকসন। শিশুদের জন্য এবং দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের জন্য তিনি কোটি কোটি ডলার দান করে গেছেন। ১৯৯৬ সালে তার আয়ের অর্থ দিয়ে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়।
২০০৯ সালের ২৫ জুন মাইকেল জ্যাকসন মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে সারা পৃথিবীতে আলোড়ন তৈরি হয়। মৃত্যুর আগে তিনি তার ভক্তদের উদ্দেশে করে বলেছিলেন—আবার দেখা হবে।
তবে মৃত্যুর পর মাইকেল জ্যাকসনের জনপ্রিয়তা কোনো অংশেই কমেনি। মৃত তারকাদের মধ্যে তিনি সর্বোচ্চ আয় করা ব্যক্তি।