ঢাকা কলেজে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারাদেশের সব সরকারি কলেজে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ক্লাস ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জন করেছেন শিক্ষকরা। কর্মবিরতির অংশ হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সব সরকারি ও বেসরকারি কলেজের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।
এই কর্মসূচিতে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তারা কালো ব্যাজ ধারণ করে কর্মস্থলে অবস্থান নিয়েছেন।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) সকালে ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি পদযাত্রার সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। জানা যায়, পদযাত্রার একপর্যায়ে এক শিক্ষার্থী শিক্ষকদের উদ্দেশে ‘দালাল’ মন্তব্য করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শিক্ষকেরা ওই শিক্ষার্থীকে কমনরুমে আটকে রাখলে তার সহপাঠীরা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
এসময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের উপক্রম হয়, ভাঙচুর হয় টিচার্স লাউঞ্জে, আহত হন কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তা।
বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কর্মবিরতি ও পরীক্ষাসমূহ স্থগিতের ঘোষণা দেয়। সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল ও সদস্যসচিব ড. মো. মাসুদ রানা খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়— ‘ঢাকা কলেজের ঐতিহ্য, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে দুষ্কৃতকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে, যা সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার জন্য হুমকি।’
এই ঘটনার প্রতিবাদে দেশের অন্যান্য সরকারি কলেজেও একাত্মতা প্রকাশ করে ক্লাস বর্জন ও কালো ব্যাজ ধারণের কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি সরকারি কলেজে শিক্ষকরা প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৪ অক্টোবরের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে এবং নতুন সূচি পরবর্তীতে জানানো হবে।