বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক প্রণীত ‘অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা ও হিসাব ম্যানুয়াল’ প্রতিপালনের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান এবং এই নির্দেশের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। একইসঙ্গে ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে পিএইচডি ইনক্রিমেন্ট বাস্তবায়নের দাবিও জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে শাবি শিক্ষক সমিতির আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের দেড় শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে শাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মাহবুবুল হাকিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম এবং শাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. তুলসী কুমার দাস।
মো. আখতারুল ইসলাম বলেন, “ইউজিসি যে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে এটা ‘কমান্ড এডমিনিস্ট্রেটিভ সিস্টেম’। এটা কোনো সিস্টেম নয়, শুধু একটা চিঠি পাঠিয়ে বলল বাস্তবায়ন করতে। এটা হাস্যকর এবং অসম্মানজনক। আমাদের বারবার বিভিন্ন বিষয় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা কি এতই দুর্বল। এ নীতিমালা সারা দেশের শিক্ষকরা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং যে পদ্ধতিতে তারা এ নির্দেশ পাঠিয়েছে অবশ্যই এটা বাতিল করতে হবে।”
ড. মো. কবির হোসেন বলেন, “১ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ‘অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা ও হিসাব ম্যানুয়াল’ কার্যকর করার যে নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। তা শাবিপ্রবির শিক্ষকবৃন্দ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রত্যাখান করেছে। আমি শাবি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বলতে চাই- ১ জুলাই কিংবা ৯ জুলাই নয়, এই মুহূর্ত থেকে যেভাবে আমাদের পারিতোষিক দেওয়া আছে ঠিক সেইভাবে অব্যাহত থাকবে। ইউজিসি যে নির্দেশনা পাঠিয়েছে তা আমরা মেনে নিচ্ছি না।”
ড. তুলসী কুমার দাস বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে একটার পর একটা নীতিমালা চাপিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এমনটা হতে থাকলে মেধাবীরা শিক্ষকতায় আসতে চাইবে না। তারা ভাববে শিক্ষকতায় ক্ষমতা নাই, অর্থ নাই, জীবনে জৌলুস নাই। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায়, পড়াশোনায় ও গবেষণায় বিকাশ ঘটবে না। এসব নীতিমালা প্রণয়ন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মতো সম্মানীয় একটা পেশাকে সম্মানহানি করা হচ্ছে।”
এর আগে গত ৭ জুন ইউজিসির সচিব ফেরদৌস জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশ বার্তায় বলা হয়, দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন আর্থিক নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ফলে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন ও আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক প্রণীত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ‘অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা ও হিসাব ম্যানুয়াল’ কমিশনের ১৬৪তম সভায় অনুমোদিত হয়। যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
আপনার মতামত লিখুন :