রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কটাক্ষ করায় লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মিকে স্থায়ী বহিষ্কার ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে বেরোবির শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং আবু সাঈদের বড় দুই ভাই উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, আবু সাঈদ একজন গণঅভ্যুত্থানের নায়ক। তাকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মি মিথ্যাচার করেছেন এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কটাক্ষ করেছেন। এরকম দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র জনতা জেগেছে’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয় নাই যুদ্ধ’, ‘ম্যাজিস্ট্রেটের চামড়া, তুলে নেব আমরা’, ‘উর্মির দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।
এসময় আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন বলেন, “অনলাইন জানতে পারলাম একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যে আওয়ামী লীগের দোসর সরকারি কর্মকর্তা হয়ে আবু সাঈদকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে সুশীল সমাজকে মায়া কান্না করতে বলেছেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা কীভাবে এত সাহস পায়? আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবি, এই কর্মকর্তাকে স্থায়ীভাবে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হোক এবং তাকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তি প্রদান করা হোক।”
শিক্ষার্থী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “আমরা তীব্রভাবে নিন্দা জানাচ্ছি যে, আবু সাঈদকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার করা হয়েছে। আবু সাঈদ একজন গণঅভ্যুত্থানের নায়ক। তাকে নিয়ে ভিত্তিহীন মন্তব্য আমরা কোনোভাবেই সহ্য করব না। যারা আবু সাঈদ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করেন, তাদের আহ্বান জানাচ্ছি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আবু সাঈদের প্রকৃত চরিত্র ও অবদান সম্পর্কে জানুন। আগে তাকে চিনুন, তারপর মন্তব্য করুন। এরপরও যদি কেউ এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেন, তাহলে ছাত্র-জনতা আপনাদের ছাড় দিয়ে কথা বলবে না।”
এর আগে শনিবার (৫ অক্টোবর) আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে কটাক্ষ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মি।
ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন- ‘মানে কত বড় বোকার স্বর্গে আছি এইটা শুধু চিন্তা করি। আবু সাইদ! বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, সন্ত্রাসী একটা ছেলে যে কী না বিশৃঙ্খলা করতে গিয়ে নিজের দলের লোকের হাতেই মারা পড়ল, সে নাকি শহীদ! এটাও এখন মানা লাগবে!
আর এই আইন ভঙ্গকারী সন্ত্রাসীর জন্য দেশের অথর্ব অতি প্রগতিশীল সমাজ কেঁদেকেটে বুক ভাসিয়েছে। তখন যাকেই বলার চেষ্টা করেছি পুরো ঘটনা তদন্তসাপেক্ষ, সেই দশটা কথা শুনিয়ে দিয়েছে। প্রশাসনে থেকে সরকারের দালাল হয়ে গিয়েছি। একথা বুঝানোর তো বাকিই রাখনি।
এই যে একটা সন্ত্রাসীর মৃত্যুকে অজুহাত বানিয়ে কত নিরীহ পুলিশ ভাইদের হত্যা করা হলো তার দায়ভার কি এই অথর্ব সমাজ নেবে? এই ছেলের জন্য প্রধান উপদেষ্টা তার দলবল নিয়ে চলে আসলেন রংপুর। লালমনিরহাট থেকে এই উপদেষ্টা দলের জন্য আবার পাঠাতে হয়েছে গাড়ি। রংপুরের বাকি সাত জেলা থেকেও গাড়ি পাঠাতে হয়েছে।
এই আহাম্মকি ভ্রমণের জন্য এত বড় গাড়ি বহর পুরো বিভাগ থেকে যে গেল, তার তেল খরচ কে দিয়েছে? যাই হোক, ভিডিওটা দেখুন। ভালোমতো দেখুন আর মুখস্থ করুন। আর কী বলব!’
 
                
              
 
																                   
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    -20251027102457.jpeg) 
                                                    


































