জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নির্মাণাধীন হল থেকে অলিউলল্লাহ অলি (২২) নামে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নির্মাণাধীন হল থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) সকালে হলের সামনে থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে তদন্তের জন্য পাঠায়।
দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, নিহত অলিউলল্লাহ অলির বাবার নাম তাইজুদ্দিন তাজু। তার বাড়ি ময়মনসিংহে। তবে থাকতেন জাহাঙ্গীরনগর সংলগ্ন গেরুয়া গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন ২২ নম্বর হলের সামনেই পড়ে ছিল লাশ। তবে কিভাবে মারা গেছেন তা তাৎক্ষণিক নিশ্চিত করতে পারেনি তারা।
এদিকে নির্মাণাধীন হল এরিয়ার একটি সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বুধবার রাত তিনটার দিকে তিনজন ব্যক্তি নির্মাণাধীন হল সংলগ্ন হলের একটি দেয়াল টপকে ২২ নম্বর হলে প্রবেশ করে। পরে তারা দ্বিতীয় দফায় আবার প্রবেশ করে। এরপর ৩টা ২৪ মিনিটের ফুটেজে দেখা যায়, মেঝেতে একজন লোক পড়ে আছে। তবে বাকি দুইজনের চেহারা সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায়নি।
নির্মাণাধীন হলের কনস্ট্রাকশন কোম্পানির ম্যানেজার খোকন বলেন, “সকাল ৬টার দিকে উঠে দেখি হলের সামনে একজনের লাশ পড়ে আছে। ধারণা করছি হল থেকে বৈদ্যুতিক তার চুরি করতে যেয়ে শক খেয়ে নিচে পড়ে মৃত্যু হয়েছে। তবে যিনি মারা গেছেন তিনি আমাদের শ্রমিক নয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।”
চলমান পরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন বলেন, “সিসিটিভির ফুটেজ থেকে জানতে পেরেছি হলে প্রবেশ করেছে তিনজন, এর মধ্যে একজন মারা গেছে। তবে কীভাবে মারা গেছে নিশ্চিত করতে পারছি না, ধারণা করছি হল থেকে পড়ে মারা গেছে।”
তদন্ত কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজী নাসের বলেন, “বিল্ডিং থেকে পড়ে যেয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। মাথায় বেশি আঘাত লেগেছে, আমরা মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় এনেছি। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।”
গত ২৭ মে নির্মাণাধীন একই ভবনের ছয়তলা থেকে পড়ে শাহের আলী (২৫) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এরপরই শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয় কনস্ট্রাকশন কোম্পানিটির বিরুদ্ধে। অভিযোগ মেনে নিহত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে ওই কোম্পানি।
এদিকে সরেজমিনে একাধিক হল পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় কর্মরত শ্রমিক মৃত্যুর পরেও তাদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জামের ব্যবস্থা করেনি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। ফলে নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছেন শ্রমিকরা।
এ অভিযোগের ব্যাপারে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন বলেন, “হলের ভেতরে কাজ করার সময় শ্রমিকদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা হয়। তবে বাইরের কাজে এখনো পুরোপুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কোনো হলে যদি একেবারে ব্যবস্থা না রাখে তবে আমরা সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবো।”