• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পুকুরের তলদেশে লাল সবুজের পতাকা


বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২২, ০২:৫৬ পিএম
পুকুরের তলদেশে লাল সবুজের পতাকা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বগুড়ার ধুনটে আলোকসজ্জার মাধ্যমে পুকুরের তলদেশে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বিশালাকার লাল সবুজের পতাকা। ধুনট উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১৫ দিন ধরে মজা পুকুর খনন করে কর্মযজ্ঞটি সম্পন্ন করা হয়েছে। কর্মযজ্ঞটির নাম দেয়া হয়েছে ‘জলতরঙ্গে বিজয় নিশান’।  

শনিবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যার পর ধুনটের মুজিব চত্বর এলাকায় করা ‘জলতরঙ্গে বিজয় নিশান’ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। 

পুকুরে আলোকসজ্জার মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ফুটিয়ে তুলতে ব্যবহার করা হয়েছে ৯২ হাজার ৩৪০টি মরিচ বাতি। পতাকাটি ১৬০ ফিট দৈর্ঘ্য ও ৯৬ ফিট প্রস্থে ব্যবহার করা হয়েছে সবুজ বাতি এবং ৩২ ফিট বৃত্তে ব্যবহার করা হয়েছে লাল বাতি। পুকুরের চারপাশে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে মেট্রোরেল, পদ্মাসেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ফ্লাইওভার, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। এছাড়া পুকুরের একপাশে লেখা রয়েছে ‘আই লাভ বঙ্গবন্ধু’। এক পাশে ‘দ্য মাদার অব হিউম্যানিটি’। এক পাশে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যে নৌকা। যে নৌকার এক পাশে বঙ্গবন্ধুর ছবি। আরেক পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। 

জলতরঙ্গে বিজয় নিশান দেখতে আসা মুক্তিযোদ্ধা লোকমান হোসেন জানান, তিনি কখনও কল্পনা করেননি ধুনটে এমন কিছু তিনি দেখতে পারবেন। তিনি খুব আনন্দিত। 

এছাড়া কর্মযজ্ঞটি দেখতে আসা সাব্বির আহমেদসহ আরও বেশ কয়েকজন জানালেন, মরিচ বাতি দিয়ে বানানো এত বড় জাতীয় পতাকা এর আগে তারা দেখেননি। পুকুরের তলদেশে ফুটে ওঠা লাল সবুজের পতাকাটি তাদের নজর কেড়েছে। ধুনটের বাসিন্দা হিসেবে তারা নিজেদের গর্বিত মনে করছেন। 

ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, “আমাদের মুজিব চত্বরের পাশেই একটি মজা পুকুর ছিলো। আমি চিন্তা করি মুজিব চত্বরকে কেন্দ্র করেই মজা পুকুরটাকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়। এরপর পুকুরটাকে খনন করার পর পাড় ঠিক করা হয়। পরে পুকুরের তলদেশে মরিচ বাতি দিয়ে পতাকা করার পরিকল্পনা করে সেভাবেই এগোনো হয়। ১৫ দিন সময় লেগেছে কাজটি করতে।”

সঞ্জয় কুমার মহন্ত আরও বলেন, “পুকুরের পাড়ে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে আমরা ১০০ ফিট লম্বা একটি নৌকা বানিয়েছি। যেখানে একপাশে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি রয়েছে। ছবিটি এমন যেটাকে দেখলে মনে হবে, তিনি চিন্তা করছেন তার স্বপ্নের বাংলাদেশটি কেমন হবে। তার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আরেক পাশে নৌকার মাঝি হিসেবে আমরা দেখিয়েছি। এছাড়া আমরা আরেকটি কাজ করেছি, সেটি হলো একবারের জন্য হলেও কেউ যেন বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসা শুরু করে সে জন্য পুকুরের এক পাশে লেখা হয়েছে ‘আই লাভ বঙ্গবন্ধু’। তার উল্টো পাড়েই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে রিপ্রেজেন্ট করেছি যে, তিনি ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’। এছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডগুলোও তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।”

বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক জানান, এটি ইন্সটলেশন আর্টের মর্যাদা পেয়েছে। এটি বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করছে। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মোহন্তকে ধন্যবাদ জানান এমন ব্যতিক্রম উদ্যোগের জন্য।

উপজেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগ স্বাগত জানিয়ে বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান বলেন, “আমি বিস্মিত। এই অনুভূতি ভাষা দিয়ে প্রকাশ করা কঠিন। একটি পতাকার জন্য কত শত প্রাণ ঝরে গেছে। সেই পতাকা নিজ এলাকায় এভাবে ফুটিয়ে তুলতে দেখে আসি আপ্লুত।”

Link copied!