প্রাচীনকালে রাজা-বাদশা আর জমিদাররা প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা বা কর আদায়ের জন্য কিংবা জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জরুরি সতর্ক বার্তা জানোনার জন্য ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা দিতেন। বিশেষ প্রয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদ এবং ভূমি অফিসের ভূমি উন্নয়ন কর, স্যানিটেশন, খাস জমি বন্দোবস্ত এবং সরকারি ভূমি উদ্ধারেও ঢাক-ঢোল পিটিয়ে চূড়ান্ত বার্তা পৌঁছে দেওয়ার নজির রয়েছে। সে ঢাকের আওয়াজে জণগণের বুক ভয়ে-আতঙ্কে কেঁপে উঠত। মানুষ দিশেহারা হয়ে যেত।
কুমিল্লায় প্রাচীন এ ঐতিহ্য ধারণ করে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে জনসচেতনতা সৃষ্টি করছেন শিক্ষক, সমাজকর্মী ও পরিবেশ সংগঠক মতিন সৈকত। তিনি ২০০০ সাল থেকে বিষমুক্ত সবজি নিরাপদ ফসল উৎপাদন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। প্রতি বছর ফসলের মৌসুমে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, মাইকিং করে এলাকার কৃষক এবং জনগণকে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনে আগ্রহী করে তুলছেন। জেলার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামসহ আশেপাশের গ্রামগুলোতে প্রতি বছর কৃষক এবং জনগণকে বিষমুক্ত ফসল নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য তিনি লড়াই করে যাচ্ছেন।
বিষমুক্ত ফুল, ফসল ও পাখিদের জন্য নিরাপদ আকাশ বিনির্মাণে ৩০ বছর ধরে পরিবেশ সুরক্ষার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ‘কৃষকের বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত মতিন সৈকত। তার এই আন্দোলন ও পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানোর কৌশল হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে ঢোল।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, “মতিন সৈকত কৃষকদের নিরাপদ ফসল রক্ষায় যেভাবে উদ্বুদ্ধ করে চলছেন তা একটি দৃষ্টান্ত। মতিন সৈকতের জন্য শুভ কামনা থাকবে।”