• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি হচ্ছে ঢেঁকি ছাটা চাল


গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২, ০২:৪৫ পিএম
আধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি হচ্ছে ঢেঁকি ছাটা চাল

গাইবান্ধায় ‘ডিজিটাল ঢেঁকি’ উদ্ভাবন করেছেন প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম। বর্তমান প্রযুক্তি ও আধুনিকতার যুগে ঢেঁকির মাধ্যমে ধান থেকে চাল তৈরি করা প্রায় বিলুপ্তির পথে। তারপরও প্রাচীন এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে নতুন রূপে আধুনিক পদ্ধতিতে তৈরি হচ্ছে ঢেঁকি ছাটা চাল। আর এসবই সম্ভব হয়েছে গাইবান্ধা সদর উপজেলার খামার বোয়ালী গ্রামের যুবক প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলামের উদ্যোগে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ডিজিটাল পদ্ধতির ঢেঁকির মাধ্যমে ধান থেকে চাল তৈরি করে বাজারজাত করছেন শফিকুল ইসলাম। তার এই ঢেঁকি ছাটা চাল বেশ সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় সারা ফেলেছে এলাকায়। এ পদ্ধতির মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও রয়েছে তার।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার খামার বোয়ালী গ্রামের মৃত আফসার উদ্দিনের ছেলে তিনি। তার স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা শেষ করে চাকরি না করে নিজের মাধ্যমে অন্যের কর্মসংস্থান তৈরি করার। সে লক্ষ্য থেকেই নিজস্ব চিন্তাচেতনায় আধুনিক পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ ও মোটরের মাধ্যমে স্থাপন করেন ‘ডিজিটাল ঢেঁকি’।

প্রাচীন ঢেঁকিতে ধানের তুষ ছাড়িয়ে চাল বের করা খুব কষ্টসাধ্য ও সময়-সাপেক্ষ। তবে শফিকুল ইসলামের তৈরি করা আধুনিক পদ্ধতির ঢেঁকিতে ধান ভানা খুবই সহজ। এতে কম সময়ে বেশি পরিমাণ চাল বের করা যায়।

প্রাচীন পদ্ধতিতে ধান থেকে চাল বের করতে হয় ঢেঁকির একপ্রান্তে পা দিয়ে পালাক্রমে চাপ প্রয়োগ করে বা পাড় দিয়ে। আর এ ঢেঁকিতে বিদ্যুতের মাধ্যমে মোটরচালিত লোহার হাতল দিয়ে পালাক্রমে চাপ দিয়ে ধানের তুষ ছাড়িয়ে চাল বের করা হচ্ছে। এতে সময় ও শ্রম খরচ হচ্ছে কম।

কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করে মধ্যযুগীয় পদ্ধতিতে বড় পাতিলে ধান ঢেলে চুলায় খড়ির মাধ্যমে জ্বাল দিয়ে ধান সেদ্ধ করা হয় এখানে। আবার সেই ধান শুকিয়ে ঢেঁকির মাধ্যমে প্রস্তুত করা হচ্ছে ঢেঁকি ছাটা চাল। এ চালের ফাইবার (আঁশ) নষ্ট না হওয়ায় পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যসম্মত হয়। ফলে ডিজিটাল ঢেঁকির চালের চাহিদা বেড়েছে ব্যাপক। এ ঢেঁকির মাধ্যমে দিনে ৬-৭ মণ ধান থেকে চাল বের করা যায়।

বর্তমানে স্বল্প পরিসরে হলেও প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলামের ডিজিটাল ঢেঁকিতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেকে। প্রযুক্তিগত বা কারিগরি সহায়তা পেলে বৃহদাকারে গ্রামীণ জনগণের কর্মসংস্থান হবে।

Link copied!