• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

হিমালয়ের হিমবাতাসে কাঁপছে নীলফামারী


নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৪, ০৩:৫৯ পিএম
হিমালয়ের হিমবাতাসে  কাঁপছে নীলফামারী
আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে মানুষ। ছবি : প্রতিনিধি

টানা পাঁচ দিন ধরে দেখা নেই সূর্যের। হিমালয় থেকে ধেয়ে আসছে হিমেল বাতাস। সেই হাড় হিম করা বাতাসে বাড়ছে  শীতের প্রকোপ। তীব্র সেই শীতে বিপর্যস্ত এখন উত্তরের জেলা নীলফামারী। 

রাত থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টির ফোঁটার মতো শিশির পড়ছে। ঘন কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত আচ্ছন্ন থাকায় দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। আকাশপথেও বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

শনিবার (১৩ জানয়ারি) সকাল ৯টায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

লোকমান হোসেন বলেন, “উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কারণে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। বর্তমানে সৈয়দপুরের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বইছে। আজ (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরকম তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন থাকবে। সৈয়দপুরের আকাশে ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। ঘন কুয়াশার কারণে প্রায় প্রতিদিনই সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামায় বিঘ্ন ঘটছে।”

এদিকে রাত ও দিনে তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দিনের চেয়ে রাতে অনেক বেশি ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। মানুষ আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। প্রচণ্ড শীতে কাজে বের হতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষ। ঠান্ডা বাতাসে ঘরে থাকা দায় হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের মানুষের। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডায় নষ্ট হচ্ছে ধানের বীজতলা ও আলুক্ষেত। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ঠান্ডায় কষ্ট পাচ্ছে গরু-ছাগল। প্রাণীগুলোর শীতজনিত রোগের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। ছবি : প্রতিনিধি

সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাতভর পড়া কুয়াশায় ভিজে গেছে পিচঢালা পথগুলো। গাছের পাতা, ফসলের ক্ষেত আর ঘাসের ওপর থেকে টপটপ করে পড়ছে শিশিরবিন্দু। ঘন কুয়াশার কারণে সকালে সড়কের যানবাহনগুলো চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। কুয়াশার মধ্যেই গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে কর্মজীবী মানুষ ছুটছে কাজের সন্ধানে।

চওড়া বড়গাছা এলাকার দিনমজুর মিঠুন রায় বলেন, “কয়েকদিন ধরে বেশি ঠান্ডা। এই ঠান্ডায় কাজ করা খুব কষ্টের, তবু তো কাজ করা লাগে। কাজ না করলে তো পেটে খাবার যাবে না।”

দিনমজুর পরিতোষ রায় বলেন, “ঠান্ডার কারণে কেউ ঘর থেকে বের হয় না। আমাদের মতো দিনমজুর মানুষের বাড়িতে কাজ না করলে পরিবার না খেয়ে থাকতে হবে।”

বাদিয়ার মোর এলাকার অটোচালক আব্দুল মোতালেব বলেন, “পেট খায় যেহেতু তাই এতো ঠান্ডায় গাড়ি চালাচ্ছি। যে ঠান্ডা, মানুষজন বের হচ্ছে কম। ঠান্ডার কারণে সবার সমস্যা হচ্ছে।”

বাসচালক মতিয়ার রহমান বলেন, “ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এছাড়া দুর্ঘটনা এড়াতে গাড়ি ধীরে ধীরে চালাতে গিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে।”

নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, শীত মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা প্রস্তুত রয়েছে। শীতবস্ত্র হিসেবে জেলার ৬ উপজেলা ও চার পৌরসভায় ৪০ হাজার পিস কম্বল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনো প্রায় ১০ হাজার মজুদ আছে। প্রয়োজনে আরও দেওয়া হবে।

Link copied!