কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের একটি টিউবের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় এই টিউবের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি অনুষ্ঠানে যুক্ত থেকে ভার্চুয়ালি এই টিউবের উদ্বোধন করবেন। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ।
মহাপরিচালক জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের পতেঙ্গা প্রান্তে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতারা।
মহাপরিচালক আরও জানান, চট্টগ্রামে পতেঙ্গার নেভাল একাডেমি প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে টানেলটি নদীর তলদেশ হয়ে চলে গেছে আনোয়ারার চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড এবং কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার লিমিটেড কারখানার মাঝামাঝি স্থানে। টানেল চালু হলে কর্ণফুলী নদী তলদেশ দিয়ে অতিক্রম করতে সময় লাগবে মাত্র পাঁচ থেকে ছয় মিনিট। টানেলের পুরো কাজ শেষ হতে আগামী ডিসেম্বর পুরো মাস লাগবে। এরপর টানেলটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লাগতে পারে টানেলটি প্রস্তুত হতে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে সেখানে যান চলাচল করা যাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশে প্রথম এই টানেল নির্মিত হচ্ছে চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায়। এই মেগা প্রকল্পটি ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে চীন সরকার।
চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ সুদের হারে ২০ বছর মেয়াদে ঋণ দিয়েছে। চীনের কমিউনিকেশন ও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড (সিসিসিসি) টানেল নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। সংযোগ সড়কসহ টানেলের সর্বমোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার। নদীর নিচে সুড়ঙ্গের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে ১০ দশমিক ৮০ মিটার ব্যাসের দুটি টিউব। এর প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। এখন চলছে টানেলের ভেতরে ফায়ার ফাইটিং, লাইটিং ও কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনার কাজ। পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্পের গাড়ি চলছে। টানেলের মধ্যে বসানো হচ্ছে ৫২টি সেচ পাম্প। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।