আকস্মিক বন্যায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার ১৯ হাজার ১৫৪টি পুকুর, দিঘি, হ্যাচারি ও মাছের খামার তলিয়ে যায়। এতে ২ কোটি ৪৮ লাখ পোনা এবং ২ হাজার ৩৩৫ টন মাছ পানিতে ভেসে গেছে। মাছ ভেসে যাওয়া ছাড়াও অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।
ঋণ নিয়ে খামার গড়েছেন মৎস্যচাষিরা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
সিলেট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, বন্যায় মাছ ভেসে গিয়ে সিলেট জেলার ১৫ হাজার ১৬৩ জন খামার মালিকের ২১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। জেলার জকিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, বিশ্বনাথ, জৈন্তাপুর ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় ক্ষতি সবচেয়ে বেশি। জকিগঞ্জে ৬ হাজার ৩৫০টি খামার তলিয়ে ৬২২ কোটি, গোয়াইনঘাটে ২ হাজার ৫৯২টি খামার তলিয়ে ১৪০ কোটি, কানাইঘাটে ২ হাজার ৩৫০টি খামার তলিয়ে ৬৪ কোটি, বিশ্বনাথে ২ হাজার ১৫০টি খামার তলিয়ে ১৫৫ কোটি, জৈন্তাপুরে ২ হাজার ১০০টি খামার তলিয়ে ৬৭৪ কোটি এবং বিয়ানীবাজারে ১ হাজার ৪০২টি খামার তলিয়ে ২১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এদিকে সদর উপজেলায় ৫৩৫টি, গোলাপগঞ্জে ৮৪৫টি, বালাগঞ্জে ৭০টি, কোম্পানীগঞ্জে ১৪৫টি এবং দক্ষিণ সুরমায় ২১০টি খামার তলিয়ে গেছে।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, “জেলায় মৎস্যচাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আর এ ক্ষতির পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে।”
অন্যদিকে সুনামগঞ্জ জেলার চার শতাধিক পুকুর পানিতে ভেসে গেছে। এতে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন ভেস্তে গেছে অনেকের। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ ও নিজের কষ্টের সঞ্চয় বিনিয়োগ করে মাছের খামার গড়েছিলেন অনেকে। সেই খামারের মাছ আকস্মিক বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
খামারিরা জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাতারাতি বন্যার পানি সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। মনকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য এখন পুকুরের চারদিকে জালের বেড়া দিচ্ছেন তারা।
জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই আকস্মিক বন্যায় সুনামগঞ্জের প্রায় ৪০৫টি পুকুর প্লাবিত হয়ে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নদীর পানি যেভাবে বাড়ছে, তাতে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। মৎস্য কর্মকর্তা সুনীল মণ্ডল জানান, জেলার এখন পর্যন্ত ৪০৫টি পুকুর প্লাবিত হয়েছে। এতে ৩০ টন বড় মাছ ও ৩৫ লাখ ছোট পোনা মাছ ভেসে গেছে। পানি বাড়লে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।
                
              
																                  
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    




































