• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ মুহররম ১৪৪৬

বিদ্যালয়ে তিন শতাধিক মৌচাক, আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২২, ০২:৪২ পিএম
বিদ্যালয়ে তিন শতাধিক মৌচাক, আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের চৌদ্দঘড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের চারদিকের কার্নিশ, জানালার সানসেট, বারান্দার বাড়তি অংশসহ ভবনের চারপাশের গাছের ডালে ডালে ঝুলছে অসংখ্য মৌমাছির চাক।

বিদ্যালয়টির দ্বিতল ভবনের বিভিন্ন অংশে বসেছে ছোটবড় ৬০টি মৌচাক। ভবনের সামনে বেশ কয়েকটি শিমুল, কাঁঠাল, আমগাছসহ একটি নারিকেলগাছে বসেছে শতাধিক মৌচাক। এসব গাছের কোনটা রয়েছে ভবন ঘেঁষে। এ ছাড়া ভবনের পেছন ও পশ্চিম পাশের গাছগুলোতেও রয়েছে শতাধিক মৌচাক। এগুলোর কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। মৌমাছির ভয়ে বিদ্যালয়টির সামনের পথ দিয়ে চলাচল বন্ধ করেছেন স্থানীয় লোকজন। 

স্থানীয় ও বিদ্যালয়-সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিদিনি মৌমাছি কাউকে না কাউকে তাড়া করে এবং হুল ফোটায়। এই কারণে সবাই আতঙ্কে থাকেন। শুধু বিদ্যালয়টিতেই নয়, গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িতেও বসেছে একাধিক চাক। সব মিলিয়ে ছয় শতাধিক মৌচাক বসেছে এলাকাটিতে।

স্থানীয়রা জানান, চরাঞ্চলের ওই এলাকাটিতে এই সময় ব্যাপক সরিষার চাষ হয়। এই সরিষার মধু সংগ্রহ করতেই প্রতিবছর নভেম্বর মাসে এখানে মৌমাছির আগমন ঘটে। আশপাশে বনজঙ্গল না থাকায় এই বিদ্যালয় এবং পাশের গাছগাছালিতে মৌ-চাক দেয় তারা। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মৌচাকের সংখ্যা অনেক বেশি।

বিদ্যালয়টির পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, “অসংখ্য মৌমাছি সব সময় ওড়াউড়ি করে। এসব মৌমাছি অনেক সময় হুল ফুটিয়ে দেয়। ভয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা বন্ধ করেছে। আমারও স্কুলে আসতে ভয় লাগে।”

স্কুলটির পিয়ন সোহেল রানা বলেন, “প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে স্কুলের ক্লাসরুম খুলে দিয়ে অফিসের জানালা দরজা বন্ধ করে ভেতরে থাকি। স্কুলের বারান্দা এবং অফিসের সঙ্গেও মৌমাছি চাক দিয়েছে। মাঝে মধ্যে ধোঁয়া দিয়ে তাড়ানোর চেষ্টা করা হলেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি।”

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মিন্টু চন্দ্র সেন জানান, প্রতিবছর নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মৌমাছির উপদ্রব সহ্য করতে হয়। এবার মৌচাকের সংখ্যা অনেক বেশি। বিদ্যালয় ভবন এবং আশপাশের গাছ মিলে তিন থেকে সাড়ে তিনশ মৌচাক বসেছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান জানান, এবার সরিষার চাষ বেশি হওয়ায় মৌমাছির চাকের সংখ্যাও বেড়েছে। শুধু স্কুলেই নয়, আশপাশের অনেক বাড়িতেও মৌমাছির চাক দিয়েছে। এমনকি আমার বাড়িতেও ৬টি চাক দিয়েছে। সব মিলিয়ে এলাকাটিতে ৫০০ থেকে ৬০০ চাক রয়েছে। এসব চাক থেকে স্থানীয়রা মধু সংগ্রহ করলেও ক্ষতির পরিমাণটাই বেশি।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, “সরিষার চাষ বেড়ে যাওয়ায় মৌমাছি আসছে ওই অঞ্চলে। চাক দিচ্ছে। সেসব চাক থেকে মধু সংগ্রহ করছেন অনেকে। এটা একটা ভালো দিক যা স্থানীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।”

Link copied!