• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৭ জ্বিলকদ ১৪৪৫
রাসিক নির্বাচন

মাঠ দখলে লিটন, প্রচারণা নেই অন্য প্রার্থীদের


এম এম মামুন, রাজশাহী
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৩, ০৯:৫৮ পিএম
মাঠ দখলে লিটন, প্রচারণা নেই অন্য প্রার্থীদের

আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচন। মেয়র পদে এখন পর্যন্ত দলীয়ভাবে তিনজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান মেয়র ও দলের কেন্দ্রীয় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির মহানগরের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম স্বপন এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন মুরশিদ আলম ফারুকী।

এদিকে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠ দাবিয়ে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

নগরীর মেয়র পদে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে নানাভাবে নির্বাচনী মাঠ দখল করে উন্নয়নমূল লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, অনেকটা চাপমুক্ত থেকে এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন লিটন। এর আগে তিনটি নির্বাচনে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হয় তাকে। এমনকি ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তখনকার মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে পরাজিত করতে অনেক বেগ পেতে হয়েছিল লিটনকে। সেই লিটনই এবারের নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। এর কারণ হিসেবে গত পাঁচ বছরের উন্নয়নকেই মনে করছেন নগরবাসী।

এবারের নির্বাচনে কিছুটা চাপমুক্ত থেকেও প্রতিদিনই নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে ভোটের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন লিটন। সোমবারও (১৫ মে) সকালে দলিল লেখক এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সঙ্গে ঘরোয়া মতবিনিময় করেন তিনি। এভাবে কোনো না কোনো কর্মসূচির মধ্যে ঘোরায়াভাবে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী।

এদিকে লিটন প্রচারণা চালিয়ে গেলেও নির্বাচনী মাঠে অপর দুই প্রার্থীকে তেমন দেখা যাচ্ছে না। শুধুমাত্র সাইফুল ইসলাম স্বপন একদিন সংবাদ সম্মেলন করে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর আর কোনো নির্বাচনী কর্মসূচিতে দেখা যায়নি তাকে। আরেক প্রার্থী মুরশিদ আলম ফারুকীকে তো মাঠেই দেখা যাচ্ছে না।

এদিকে আগামী নির্বাচনে ‘কে ধরতে যাচ্ছেন নগরীর হাল’ তা নিয়ে পাড়া-মহল্লা বিভিন্ন চায়ের দোকানে চলছে নানা আলোচনা।

নগরীর রেলগেট এলাকার ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, “বিএনপির প্রার্থীকে ভোট দিয়ে কি হবে? এর আগের পাঁচ বছরে দেখেছি কোনো উন্নয়ন হয়নি। এমনকি নগর ভবনের কর্মচারীদেরই ঠিকমতো বেতন দিতে পারেনি। বেতনের দাবিতে মাঝে মধ্যেই সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা আন্দোলন করতেন। কিন্তু গত নির্বাচনের পরে আমি আর কখনোই এ দৃশ্য দেখিনি। আমার দোকানটি নগর ভবনের গেটের সামনেই। এখানে বসে নগর ভবনের অনেক খবরই আমি পাই। সেই দিক থেকেই বলছি, এবার নগর ভবনের বিএনপিপন্থি কর্মচারীরাও মেয়র লিটনের পক্ষে মাঠে নামবেন। এ কারণে তিনি এবার অনেক এগিয়ে।“

নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা মোজাহার হোসেন বলেন, “গত পাঁচ বছরে রাজশাহী নগরীতে কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। আমরা এত উন্নয়ন কখনো দেখিনি। যে দলই করি, আর ভোট যাকেই দিই এটি অস্বীকার করার সুযোগ নাই। এত উন্নয়ন যখন অন্য কারো আমলে হয়নি, কাজেই আগামীতেও মেয়র লিটনই ক্ষমতায় আসছে।”

সচেতন নাগরিক কমিটির রাজশাহী জেলা সভাপতি আহমেদ শফি উদ্দিন বলেন, “একটা মানুষ কাজ করতে গেলে নানা ভুল হবেই। কিন্তু আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের কথা চিন্তা করে এ নগরীর উন্নয়নের কথা ভাবতে হবে। সেদিক বিবেচনা করে আমি বলবো এবার মেয়র লিটন সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রার্থী নগরবাসীর কাছে।”

শফি উদ্দিন আরও বলেন, “আগের সবকটি নির্বাচন দেখার সৌভাগ্যে হয়েছে আমার। এতো আগে-ভাগেই কোনো নির্বাচনে মেয়র পদে কে জিতবেন সেটি বলা যেত না। চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আগের মেয়ররা। তবে এবার মনে হচ্ছে, নির্বাচন এক তরফা হবে। বর্তমান মেয়রের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী আমরা এখন পর্যন্ত কাউকে দেখতে পাচ্ছি না। মাঝে যে কয়দিন সময়, তাতে নতুন করে শক্ত প্রার্থী মাঠে নামলেও তার পক্ষেও পরিস্থিতি সামলে উঠা কঠিন হয়ে পড়বে।”

Link copied!