ভরা এই শীতের সময়ে টাঙ্গাইলের বাজারগুলো শাকসবজি ভরপুর। অনুকূল আবহাওয়া, ফলন ভালো হওয়া ও বাজারে সরবরাহ বেশি থাকায় নতুন বছরের শুরুর দিন থেকেই সব ধরনের সবজির দাম ক্রেতারা হাতের নাগালের মধ্যেই পাচ্ছেন। সরবরাহ বাড়ায় টাঙ্গাইলের বাজারগুলোতে কমেছে টমেটো, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, নতুন আলু ও গাজরের দাম। কিন্তু নিত্যপণ্যের দাম কমেনি।
এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দামও কমেছে। দীর্ঘদিন পর কমতির দিকে চালের দাম। তবে শুধু মোটা চালের দামই কমেছে। স্বর্ণা ও পাইজাম জাতের চালের দাম কমেছে কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। তবে এখনো অপরিবর্তিত রয়েছে সরু চালের দাম।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকালে পার্ক বাজার, ছয়আনি বাজার, সিটি বাজার ও আমিন বাজারসহ ঘুরে দেখা যায় এসব চিত্র।
মঙ্গলবার সকালে শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাঝারি আকারের প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০ টাকা, কয়েকদিন আগেও ১২০ টাকায় বিক্রি করা টমেটোর দাম এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকা। প্রতি কেজি শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা। পেঁপের কেজি ২০ টাকা, বেগুন কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এ ছাড়া কমে এসেছে নতুন আলুর দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন আলুর দাম এখন ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে। মুলার কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকা, শসার কেজি ৫০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৪০ টাকা, চিচিঙ্গার কেজি ৫০ টাকা, লেবুর হালি আকারভেদে ২০ থেকে ৩০ টাকা, পেঁয়াজের কলি প্রতি আঁটি ১৫ থেকে ২০ টাকা। কাঁচা মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধনেপাতা এক আঁটি ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাল, কলমি ও পালংশাকের আঁটি আকারভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে প্রতি কেজি মসুর ডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। আমদানি করা আদার কেজি ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, দেশি আদার কেজি ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, সবজি ও চালের বাজারে স্বস্তির খবর থাকলেও কোনো সুখবর নেই নিত্যপণ্যের দামে। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনির দাম ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি। কমেনি মসুর ডাল ও আটা-ময়দার দাম। খুচরায় প্রতি কেজি মসুর ডাল এখনো ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আটার দাম ৭০ টাকা, ময়দা ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পার্ক বাজারের সবজি বিক্রেতা মঈনুল হক বলেন, “আবহাওয়া ও ফলন ভালো হওয়ায় বাজারে শাকসবজি প্রচুর পাওয়া যাচ্ছে। শীতে তরিতরকারির দাম আগের থেকে অনেক কমেছে। ক্রেতারাও স্বস্তি পাচ্ছে, আমাদের বিক্রিও ভালো হচ্ছে।”
আরেক সবজি বিক্রেতা রাজ্জাক মিয়া বলেন, “আগের তুলনায় সবজির দাম অনেক কমেছে। এ রকম চলতে থাকলে আমাদেরও ভালো, কৃষকদেরও ভালো, ক্রেতাদেরও ভালো।”
সবজি কিনতে আসা বিশ্বাস বেতকা এলাকার খাইরুল ইসলাম বলেন, “আগের তুলনায় সবজির দাম অনেক কমে এসছে। এখন বাজার করেও স্বস্তি পাচ্ছি। তবে মুদির দোকানের পণ্যগুলোর দাম কমলে আরও স্বস্তি পাব।”
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শান্ত হোসেন পার্ক বাজারে সবজি কিনতে এসে বলেন, “সবজির বাজার ঠিক আছে। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। কিন্তু অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমেনি।”
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রানুয়ারা খাতুন বলেন, “আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে দ্রব্যে দাম বেশি না দিতে পারে। সে জন্য বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।”