বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। সকাল থেকে সমুদ্র উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা উচ্চতায় ঢেউ আছড়ে পড়ছে।
সমুদ্রে গোসলে নেমে কোনো পর্যটক যেন বিপদে না পড়েন, সেজন্য জেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ড বাহিনীর পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে সতর্কতামূলক প্রচারণা। তবে কোনো ধরনের নির্দেশনা মানছেন না পর্যটকরা।
শুক্রবার (১২ মে) সকাল থেকেই কক্সবাজার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। বেলা ১১টার পর কক্সবাজারের আকাশ থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ঝরতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে হাজারো পর্যটক সমুদ্রের লোনাপানিতে নেমে গোসল করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সৈকতের কলাতলী পয়েন্টে কয়েক হাজার পর্যটক সমুদ্রে নেমে গোসল করছেন। দূরে দাঁড়িয়ে কয়েকজন ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ড কর্মী পর্যটকের নজরদারি করছেন।
সুগন্ধা পয়েন্টে গিয়েও কয়েক হাজার পর্যটককে সমুদ্রের পানিতে নেমে গোসল করতে দেখা যায়। গোসলে নেমে কোনো পর্যটক যেন ভেসে না যান, সেজন্য বালুচরে দাঁড়িয়ে এবং কোমরপানিতে নেমে পর্যটকদের নজরদারিতে রাখছেন সি সেফ লাইফগার্ড প্রতিষ্ঠানের ২৫ কর্মী।
সুগন্ধা পয়েন্টের সি সেফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার সিফাত সাইফুল্লাহ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার কথা বলা হলেও কক্সবাজার সৈকতের অবস্থা এখনো স্বাভাবিক। তবে সমুদ্রের ঢেউগুলো কিছুটা এলোমেলোভাবে উপকূলে আছড়ে পড়ছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, সমুদ্রের অবস্থার পরিবর্তন ঘটতে পারে।
সিফাত সাইফুল্লাহ বলেন, এমন পরিস্থিতিতেও বেলা ১১টা পর্যন্ত অন্তত ১২ হাজার পর্যটক সমুদ্রে নেমে গোসল করেছেন। পর্যটকদের সাগরে নামতে নিষেধ করলেও তারা কোনো পাত্তা দিচ্ছে না। আর পর্যটকদের সর্তক করতে লাল পতাকা টানানো হয়েছে।
স্ত্রী ও এক মেয়েকে নিয়ে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে নামেন ঢাকার আরামবাগ এলাকার ব্যবসায়ী কামরুল হাসান (৪৫)। ১৫-২০ মিনিট পর পানি থেকে উঠে এসে তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক, পরিষ্কার আকাশ। সাগরও অন্যান্য দিনের মতো শান্ত। সেখান থেকে দূরে সাগরে অনেক নৌকাকে মাছ ধরতে দেখা যাচ্ছিল।
জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ বলেন, মোখা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলেও শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কক্সবাজারের পরিবেশ-পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। সাগর শান্ত আছে। গোসলে নেমে কোনো পর্যটক যেন বিপদে না পড়েন, সেজন্য আগাম সতর্কতা হিসেবে বালুচরে একাধিক লাল নিশানা উড়ানো হচ্ছে। চলছে ঘূর্ণিঝড় ও সতর্কতা নিয়ে প্রচারণা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, এ ঘূর্ণিঝড় আগামী রোববার দুপুরের দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। অবশ্য এর আগে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কক্সবাজার ও এর আশপাশের এলাকা এবং সেই সঙ্গে দেশের অন্যত্র বৃষ্টি হবে। আর ঘূর্ণিঝড়ের সময় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হতে পারে।
আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে অতি ভারী বৃষ্টি, প্রবল ঝোড়ো হাওয়া, বজ্রবৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হতে পারে। প্রবল বৃষ্টির ফলে ভূমিধস হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টির যে গতিপ্রকৃতি, তাতে এটি কক্সবাজারের টেকনাফের দক্ষিণ দিক দিয়ে যাবে বলে জানান আজিজুর রহমান।
                
              
																                  
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    




































