ভালোবাসার কোনো সীমান্ত থাকে না—এ কথাটিই যেন সত্যি করে দেখালেন চীনের এক তরুণ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক তরুণী। ভালোবাসার টানে সাত সমুদ্র তের নদী পেরিয়ে চীন থেকে বাংলাদেশে এসেছেন ওয়াং তাও নামে এক চীনা যুবক। তার গন্তব্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রাম—যেখানে আছেন তার প্রেয়সী সুরমা আক্তার।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২ নভেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জজ আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে মুসলিম রীতি অনুসারে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হবে।
সুরমা আক্তার একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তরুণী। তার বাবা তাহের মিয়া স্থানীয়ভাবে পরিচিত একজন ব্যবসায়ী। অপরদিকে, ওয়াং তাও চীনের হোয়ানান প্রদেশের ওয়াং ইচাং চাওয়ের ছেলে।
প্রায় দেড় মাস আগে একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম “ওয়াল টক”–এর মাধ্যমে সুরমা ও ওয়াং তাওয়ের পরিচয় হয়। নিয়মিত কথা বলা, ভিডিও কল আর বার্তালাপে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে তাদের প্রেমের সম্পর্ক। একে অপরের সংস্কৃতি ও জীবনধারা জানার মধ্য দিয়েই গভীর হয় সম্পর্ক। অবশেষে দুজনই সিদ্ধান্ত নেন—তারা জীবন একসঙ্গে কাটাবেন।
গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসেন ওয়াং তাও। বিমানবন্দর থেকে সুরমার পরিবারের সদস্যরা তাকে স্বাগত জানিয়ে সরাসরি নিয়ে যান নাসিরনগরের কোনাপাড়ায়। বিদেশি এই বরকে এক নজর দেখতে ওই রাতে শত শত মানুষ জড়ো হয় সুরমার বাড়িতে।
সুরমা আক্তারের মা নুরেনা বলেন, আমার মেয়ের ভালোবাসা পেতে চীন থেকে চলে এসেছে ছেলেটি। সে খুব ভদ্র, শান্ত-শিষ্ট। কোনো ধর্মে বিশ্বাস করে না, কিন্তু আমার মেয়েকে বিয়ে করতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। আমরা আল্লাহর উপর ভরসা রেখে বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
নাসিরনগর থানার কুন্ডা বিট অফিসার এসআই মো. জাহান-ই-আলম জানান, চীনা যুবক আসার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তার পাসপোর্ট ও ভিসা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছি তিনি বৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছেন। শুনেছি, আগামীকাল আদালতে তাদের বিয়ে হবে।


































