জামালপুরে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রকে এক দিনে করোনার তিন ডোজ ফাইজার টিকা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষার্থীর নাম মো. রাহিম (১৩)। এ ঘটনায় তিন সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) সকালে জামালপুর শহরের মির্জা অডিটরিয়াম টিকাকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। শিশু রাহিম স্বাস্থ্য বিভাগের পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
মো. রাহিম জামালপুর শহরের বগাবাইদ এলাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক শাকির হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় বগাবাইদ উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
এদিকে রাহিম ও তার স্কুলের একজন শিক্ষিকার অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করেছেন জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস।
প্রথম ডোজ টিকা নেওয়ার জন্য সোমবার সকাল ১০টায় রাহিমসহ বিভিন্ন শ্রেণির শতাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে দুজন শিক্ষক জামালপুর শহরের মির্জা আজম অডিটরিয়াম টিকাকেন্দ্রে যান। শিশুদের টিকা দেওয়ার সময় ওই দুই শিক্ষক তখন টিকাকেন্দ্রের বাইরে ছিলেন। এরই মধ্যে জানাজানি হয় শিশু রাহিমের বাঁ হাতে পরপর তিন ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাহিম তার স্কুলে গিয়ে তাকে তিন ডোজ টিকা দেওয়ার কথা জানায়।
বিষয়টি শোনার পর সহকারী শিক্ষিকা নাজমুন নাহার শেলী ভুক্তভোগী রাহিমকে নিয়ে দ্রুত ওই টিকাকেন্দ্রে গেলে তার সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীদের বেশ তর্কবিতর্ক হয়। স্বাস্থ্যকর্মীরা রাহিমের কিছুই হবে না বলে তাকে নিয়ে টিকাকেন্দ্র থেকে চলে যেতে বলেন। এ সময় শিক্ষিকা নাজমুন নাহার শেলী শিশু রাহিমকে নিয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে গিয়ে তাকে এক দিনে প্রথম ডোজের তিন ডোজ ফাইজারের টিকা দেওয়ার অভিযোগ করেন। অভিযোগের পর রাহিমকে জামালপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। শিশুটিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলেও ওই শিক্ষিকাকে জানিয়ে দেন সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস। এছাড়া এক শিশুকে এক দিনে তিন ডোজ টিকা দেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন বলেও ওই শিক্ষিকাকে আশ্বস্ত করেন সিভিল সার্জন। পরে ওই শিক্ষিকা শিশু রাহিমকে তার বাড়িতে স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেন।
রাহিমের বাবা শাকির হোসেন বলেন, “স্কুলের স্যাররা টিকা দিতে নিয়ে যায় রাহিমকে। বাড়ি থেকে ফোনে জানাইছে রাহিমকে নাকি তিন ডোজ টিকা দিছে। আমি স্কুলের স্যারদের কাছে বিচার দিছি। আমি বাড়িতে ফিরে বিষয়টি দেখব।”
শিক্ষিকা নাজমুন নাহার শেলী বলেন, “সিভিল সার্জনের কাছে অভিযোগ করেছি। সিভিল সার্জন শিশু রাহিমের স্বাস্থ্যগত দিক নিয়মিত পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থাসহ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।”
সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস বলেন, “স্কুলের শিক্ষিকা শিশু রাহিমকে আমার কাছে নিয়ে এসেছিলেন। তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। আপাতত সে সুস্থ আছে। শিশুটি আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে থাকবে। টিকাকেন্দ্রের যে বুথে এ ঘটনা ঘটেছে তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আবু আহমদ সাফীকে প্রধান করে এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করে দিয়েছি।”