চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার কানুপুর উচ্চবিদ্যালয়ে সাবেক সহকারী শিক্ষক রইস উদ্দিন টিপু। অনটনে পড়ে একটি রেস্টুরেন্টে দিনমজুরের চাকরি নেন। প্রিয় শিক্ষকের এমন দূরাবস্থতার কথা ছড়িয়ে পড়লে এগিয়ে আসেন প্রাক্তন ছাত্ররা। শিক্ষক রইস উদ্দিনকে এক খণ্ড জমি কিনে দেন তারা। সেখানে বাড়ি নির্মাণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়।
আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি ওই শিক্ষকের হাতে অনুদানের একটি চেক তুলে দেন।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রইস উদ্দিন টিপু জানান, শিক্ষার্থীরা আমার দুঃসময়ে পাশে এসে দাঁড়াবে, তা আমি ভাবতেই পারিনি। সত্যিই অনেক ভালো লাগছে ভেবে। তারা আমাকে থাকার জন্য একটি বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছে। আমাকে হোটেলের কাজ করতে দেয়নি তারা।
রইস উদ্দিনের ছাত্র হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের স্যার রেস্টুরেন্ট কাজ করছে এমন পোস্টটি দেখে খুবই খারাপ লেগেছিল। আমাদের শিক্ষক এভাবে কষ্টে থাকে তা দেখে ছাত্র হিসেবে মেনে নিতে পারছিলাম না। তারপর ১৯৯৮ ব্যাচ থেকে ২০২১ ব্যাচ পর্যন্ত সিনিয়র-জুনিয়রদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। একটি ফান্ড করে টাকা তোলা হয়। ওই ফান্ডে প্রায় ৪ লাখ টাকা জমা হয়েছিল। এরপর বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে বসে এতে আরও অর্থ যোগ করে স্কুলের পেছনে তিন শতক জমি কেনা হয়। সেই জমিতে একটি বাড়ি নির্মাণের চলছে। বর্তমানে আমাদের রইস উদ্দিন স্যার যে ভাড়া বাসায় থাকেন সেই বাসার ভাড়াও আমরা দিচ্ছি।
আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম হাবিবুল হাসান বলেন, “বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলে একটি ফান্ড গঠন করা হয়। ফান্ডের টাকা দিয়ে স্কুলটির পেছনে তিন শতক জমি কিনে সেখানে সেমি পাকা ঘর করা হচ্ছে।”
১৯৯৭ সালে কানুপুর উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন রইস উদ্দিন টিপু। অবসরে যান ২০১৮ সালে।