যৌতুকের জন্য হাত-পা বেঁধে গৃহবধূকে নদীতে নিক্ষেপ

সুনামগঞ্জে যৌতুকের জন্য এক গৃহবধুর হাত-পা ও মুখ বেঁধে নদীতে ফেলে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল ৯টায় নির্যাতিত গৃহবধূ মাইফুল বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আর এই ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাতে।

খবর পেয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নদী থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মাইফুল বেগম (২৩) জেলার তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদলারপাড় গ্রামের কারী নিজাম উদ্দিনের মেয়ে। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আট মাস আগে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার চৌধুরীপাড়া গ্রামের সাজিদুল ইসলামের ছেলে আবু তাহেরের (২৮) সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মাইফুল বেগমের। কিন্তু বিয়ের পর স্বামী আবু তাহের তার নিজ বাড়ি রেখে স্ত্রী মাইফুল বেগমকে নিয়ে তার বাবার বাড়ি তাহিরপুর উপজেলার বাদলারপাড় গ্রাম সংলগ্ন ভোলাখালি গ্রামে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন।

বিয়ের দুই মাস যেতে না যেতেই যৌতুকের জন্য মাইফুল বেগমকে স্বামী আবু তাহের নির্যাতিন শুরু করেন। তার নির্যাতন সইতে না পেরে মাইফুল বেগম বাবার কাছ থেকে একবার ৫০ হাজার টাকা এনে দেন। তারপরও ক্ষান্ত হয়নি সেই লোভী পাষণ্ড স্বামী আবু তাহের। তার চাহিদা দিনদিন বাড়তে থাকে। অবশেষে কোনো উপায় না পেয়ে গৃহবধূ মাইফুল বেগম তার বাবার বাড়িতে চলে আসেন।

শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাত অনুমান ১০টায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে মাইফুল বেগম ঘরে বাহিরে যান। আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা যৌতুক আবু তাহের, তার ভাই জাকির হোসেন (২৫) ও বাবুল হোসেন (২২) মিলে তাকে তুলে নিয়ে যান। পরে ওই গৃহবধূর হাত-পা ও মুখ বেঁধে ভাংগারখাল নদীতে নিয়ে ফেলে দেন। এসময় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দেখতে পেয়ে থানায় জানালে পুলিশ এসে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় নদী থেকে গৃহবধূ মাইফুল বেগমকে উদ্ধার করেন।

ওই গৃহবধূর অসহায় বাবা কারী নিজাম উদ্দিন বলেন, “যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে এভাবে প্রাণে মারার চেষ্টা করা হবে আমি কোনদিনও ভাবিনি। আমি আমার মেয়ের নির্যাতনের বিচার চাই।”

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন, নির্যাতিত গৃহবধূর বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।