• ঢাকা
  • রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ২৫ মুহররম ১৪৪৬

দুদকের মামলায় কারাগারে মেয়র, মহাসড়ক অবরোধ


বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২২, ০৯:৪৪ পিএম
দুদকের মামলায় কারাগারে মেয়র, মহাসড়ক অবরোধ

আইনি প্রক্রিয়া শেষে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সহস্রাধিক নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে বাগেরহাটের পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান ও সাবেক পৌর সচিব রেজাউল করিমকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এদিকে তার সমর্থকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

বুধবার দুপুরে দীর্ঘ শুনানি শেষে আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল ইসলাম এই আদেশ দেন।

বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, মেয়রকে কারাগারে পাঠানোর সংবাদে খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়ক ও আদালত চত্বরসহ একাধিক স্থানে সড়ক অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকরা। রাস্তার দুপাশে বাস রেখে এবং পলিথিনে আগুন ধরিয়ে যান চলাচলে বাধার সৃষ্টি করেন অবরোধকারীরা। কিছু সময় পরে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন তারা।

এদিকে গণমাধ্যমকর্মীরা ছবি তুলতে গেলে বাধা দেন মেয়রের কর্মী-সমর্থকরা। এ সময় ক্যামেরা ভেঙে ফেলা ও সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তারা।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমানের দুর্নীতি অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) খুলনা কার্যালয়।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর অবৈধ নিয়োগ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান ও সাবেক পৌর সচিব রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে দুদক খুলনা কার্যালয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন সহকারী পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ। একটি মামলায় বাগেরহাট পৌরসভায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে ১৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে সরকারি কোষাগার থেকে এক কোটি ২৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা আত্মসাতের অপরাধে মেয়রসহ ১৮ জনকে আসামি করা করা হয়। অন্যদিকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বাগেরহাটে আবাহনী ক্লাবের কমপ্লেক্স এবং বাগেরহাট ডায়াবেটিক হাসপাতাল কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব ভবনের কাজ না করে এক কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে খান হাবিবুর রহমান এবং মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে আসামি করা হয়।

ওই দুই মামলায় ৩১ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে মেয়রের আগাম জামিন নামঞ্জুর করা হয়। এ ছাড়া আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী মেয়র বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী নকীব সাইফুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ড. একে আজাদ ফিরোজ টিপুসহ শতাধিক আইনজীবী আসামিপক্ষে উপস্থিত ছিলেন। দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মিলন কুমার ব্যানার্জি।

আসামি পক্ষের আইনজীবী ড. একে আজাদ ফিরোজ টিপু বলেন, “খান হাবিবুর রহমান ও মোহাম্মদ রেজাউল করিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।”

একে আজাদ ফিরোজ টিপু আরও বলেন, “যেহেতু মেয়র শারীরিকভাবে অসুস্থ তার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আদালতে উপস্থাপন করলে আদালত তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন, আমরা এই মামলাটি আইনি মোকাবিলা করব।”

এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মিলন কুমার ব্যানার্জি বলেন, “দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের ২নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারার মামলায় মেয়রের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন বিচারক। একই মামলায় আদালত বাগেরহাট পৌরসভার সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিমকেও কারাগারে পাঠিয়েছেন।”

Link copied!