ফরিদপুরে পদ্মায় ট্রলারডুবির ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজ দুই শিক্ষকের সন্ধান মেলেনি। এতে হতাশ নিখোঁজ দুই শিক্ষকের পরিবার।
পদ্মায় ভ্রমণে গিয়ে ফরিদপুর সদরের তাইজউদ্দীন মুন্সীর ডাঙ্গী এলাকায় ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ হন ওই দুই শিক্ষক।
বুধবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় দিকে নিখোঁজ হলেও শনিবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র কর্মকর্তা সুভাষ বাড়ৈ।
নিখোঁজ ওই দুই শিক্ষক হলেন ফরিদপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী শিক্ষক আলমগীর হোসেন (৪১) ও সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী শিক্ষক আজমল হোসেন শেখ (৪৪)। এদের মধ্যে আজমল হোসেনের বাড়ি সদর উপজেলার খলিলপুরে। তবে তিনি জেলা শহরের গোয়ালচামটে ভাড়া থাকেন। আর আলমগীর হোসেনের বাড়ি খলিল মন্ডলের হাট এলাকায়। তিনি শহরের ঝিলটুলি পুরাতন পাসপোর্ট অফিস এলাকায় থাকেন।
এ ট্রলার দুর্ঘটনায় আহত ফরিদপুরের চর মাধবদিয়া ইউনাইটেড উচ্চবিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ে সহকারী শিক্ষক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস (৪২) ও সারদা সুন্দরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবসায়ী শিক্ষা শাখার শিক্ষক বলাই কুমার দাসকে (৪১) ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া আরও দুই শিক্ষক প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ফরিদপুর ২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. রাকিব হোসেন জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। ১৪ জন শিক্ষক এবং মাঝিসহ ট্রলার ডুবে যায়। ১২ জনকে উদ্ধার করতে পারলেও দুইজন শিক্ষককে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র কর্মকর্তা সুভাষ বাড়ৈ জানান, ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত তারা ট্রলার নিয়ে খোঁজ চালাচ্ছেন। নদীতে প্রচুর স্রোত। এজন্য তাদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। ডুবুরি দল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। তারাও উদ্ধারে তৎপর চালাচ্ছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, নিখোঁজ দুই শিক্ষককে উদ্ধারে নৌ-পুলিশ, জেলা পুলিশ, ডুবুরি ও দমকল বাহিনীর কয়েকটি দল কাজ করছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ডুবুরি দল নতুন করে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। তবু এখন পর্যন্ত সন্ধান মেলেনি ওই দুই শিক্ষকের।
ফরিদপুর শহর থেকে বুধবার (২৫ আগস্ট) বিকেল ৩টায় ট্রলার ভাড়া করে পদ্মায় ভ্রমণে যান বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১৪ জন শিক্ষক। ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফেরার পথে তীব্র স্রোতের মুখে ৩ নম্বর পন্টুনের সঙ্গে সংঘর্ষে শিক্ষকদের বহন করা ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় ১২ জন শিক্ষক সাঁতারে পাড়ে উঠতে পারলেও আজমল ও আলমগীর নামের দুই শিক্ষক নিখোঁজ রয়েছেন।