• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩০, ১৬ রজব ১৪৪৬

এবার বীরমুক্তিযোদ্ধাকে মারধর, ৭ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা


কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২১, ০২:৫২ পিএম
এবার বীরমুক্তিযোদ্ধাকে মারধর, ৭ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

কুমিল্লায় এবার বীরমুক্তিযোদ্ধাকে মারধর, নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটের অভিযোগে সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক গৃহবধূ।

বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জজকোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা।

জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী সালমা আক্তার বাদী হয়ে সোমবার (৯ আগস্ট) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।

অভিযুক্তরা হলেন ব্রাহ্মণপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম, জীবন কৃষ্ণ মজুমদার, কামাল হোসেন, উপপরিদর্শক (এএসআই) কৃষ্ণ সরকার, মতিউর রহমান, পুলিশ সদস্য নুরুজ্জামান ও জামাল হোসেনসহ অজ্ঞাত আরও ৮-১০ জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী সালমা আক্তার জানান, ৩ আগস্ট সন্ধ্যায় ভাই লোকমান হোসেনের খোঁজে ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে সাদা পোশাকে একদল পুলিশ সদস্য তাদের বাড়িতে যায়। পরিচয় জানতে চাইলে তারা সবাই ব্রাহ্মণপাড়া থানার পুলিশ সদস্য হিসেবে দাবি করেন।

পরে তারা ঘরে ঢুকে করে বিভিন্ন রুমে তল্লাশি শুরু করেন। কোনো মামলায় ওয়ারেন্টের আদেশ আছে কিনা জানতে চাইলে কৃষ্ণ সরকার গালাগাল করে লাঠি দিয়ে কাঠের আলমরির গ্লাস ভেঙে ফেলে। আলমারির চাবি নিয়ে তল্লাশির নামে ড্রয়ারে থাকা ব্যবসার জন্য রক্ষিত নগদ দুই লাখ টাকা এবং দুই জোড়া কানের দুল, দুইটি চেন ও তিনটি আংটিসহ চার ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

মামলায় সালমা আক্তার উল্লেখ করেন, আমার চিৎকার শুনে পাশের বাড়িতে থাকা মুক্তিযোদ্ধা বাবা জামাল আহাম্মদ খান ও স্বামী আবুল কালাম আজাদ এগিয়ে পার্শ্ববর্তী সাক্ষী বিল্লাল খানের দোকানের সামনে আসেন। তখন পুলিশ সদস্যরা স্বামী আবুল কালাম আজাদকে দোকানের সামনে থেকে টেনেহিঁচড়ে আটকের চেষ্টা করে। এসময় বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তারে আপত্তি জানান বাবা। তখন এএসআই কৃষ্ণ সরকার বাবা মাথায় লাঠি দিয়ে সজোরে আঘাত করেন। এছাড়া পুলিশের অন্য সদস্যরা আমার বাবা ও স্বামীকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। উপস্থিত লোকজন চিৎকার করলে গুলির হুমকি দিয়ে পুলিশ সদস্যরা তার স্বামীকে আটক করে নিয়ে যায়। পুলিশের হামলায় আহত বীরমুক্তিযোদ্ধা বাবাকে চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা জানান, সালমা আক্তারের ভাই লোকমান হোসেন ডাকাতিসহ ৯টি মামলার আসামি। পলাতক থাকায় পুলিশ সাদা পোশাকে গ্রেপ্তারের জন্য সালমা আক্তারের বাড়িতে গেলে তারা পুলিশের উপর হামলা চালায়।

এ ঘটনায় পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এদিকে হামলাকারীরাও মামলা করেছেন। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

এদিকে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলি আদালতের বিচারক বেগম মিথিলা জাহান নিপা মামলাটি আমলে নিয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ফারুখ আহম্মেদকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন এবং আগামী ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ফারুখ আহম্মেদ বলেন, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক অভিযোগটি তদন্ত করা হবে।

উল্লেখ্য, পাশের জেলা ফেনীতে ব্যবসায়ীর ২০টি স্বর্ণের বার ডাকাতির ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ফেনী গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামসহ ৬ পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ফেনী জেলা পুলিশ। 

Link copied!