করোনা মহামারিতেও চট্টগ্রামের বৃহৎ প্রকল্প বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের কাজ এগিয়ে চলছে। এখন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানায় টানেল বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নির্মিত হচ্ছে।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টানেলের কাজ শেষ করার জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ৩ দশমিক ৩১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই টানেলের বোরিং কাজ ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
টানেল নির্মাণের জন্য চায়নিজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিসিসিসি লিমিটেড ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মধ্যে ২০১৫ সালের ৩০ জুন বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বর্তমানে এই মহামারির মধ্যে নির্মাণসামগ্রী সরবরাহে সাময়িক অসুবিধা হলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যান চলাচলের জন্য উপযোগী করে তোলা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। নদীর তলদেশে স্বয়ংক্রিয় নির্মাণকাজ ও নদীশাসনের মতো জটিলতা না থাকায় প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
এ মহাপ্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন রয়েছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া ৫ হাজার ৯১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে চীন সরকার। এটি সম্পূর্ণ চালু হলে প্রতিবছর প্রায় ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
টানেলের নির্মাণকাজ শেষ হলে জেলার দক্ষিণ অংশে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, ইকোনমিক জোন গড়ে উঠবে। তা ছাড়া টানেল ব্যবহার করে শিল্পকারখানার কাঁচামাল আনা-নেওয়া এবং উৎপাদিত পণ্য সারা দেশে সহজে পৌঁছানো যাবে, এমনটাই আশা করছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে। বর্তমানে পতেঙ্গা ও আনোয়ারায় টানেল নির্মাণের কাজ চলছে পুরোদমে। এ প্রকল্পের নির্ধারিত সময় ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা।
এ টানেলের চট্টগ্রাম নগরীর পাশের নির্মাণকাজ শুরু হয় পতেঙ্গা নেভাল একাডেমি থেকে। অপর প্রান্তে কাফকো ও সিইউএফএল সীমানার মধ্য দিয়ে আনোয়ারায় সংযোগ হবে।
টানেলের প্রতিটি টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। প্রতিটি টিউবে দুটি করে মোট চারটি লেন থাকবে। মূল টানেলের সঙ্গে নদীর দুই পাশে মোট ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযুক্ত সড়ক থাকবে। তা ছাড়া ৭২৭ মিটার দীর্ঘ একটি ফ্লাইওভার রয়েছে আনোয়ারা অংশে।
প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘চলতি মাসে প্রকল্পটির প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের নির্ধারিত সময় ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে করোনার কারণে কাজে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এরপরও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টানেলের কাজ শেষ করতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। টানেলের পতেঙ্গা ও আনোয়ারা অংশের সংযোগ সড়ক এবং আনোয়ারা অংশে ওভারব্রিজের কাজও এগিয়ে চলছে। টানেল বাস্তবায়ন শেষ হলে এটি জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
টানেলের কাজ শেষ হলে চীনের সাংহাইয়ের আদলে চট্টগ্রামে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।
 
                
              
 
																                   
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    






































