এক এইডেন মার্করামের কাছেই হারতে হয়েছে পাকিস্তানের। এই প্রোটিয়া ব্যাটারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে এক উইকেটে জয় পায় টেম্বা বাভুমার দল। এই হারের ফলে পাকিস্তানের সেমিফাইনালে যাওয়ার পথটা অনেকটা কষ্টকর হয়ে গেছে। পক্ষান্তরে প্রোটিয়াদের টপ চারে যাওয়ার পথটা আরও সহজ থেকে সহজ হয়ে গেছে। পাকিস্তানের দেওয়া ২৭১ রানের লক্ষ্য প্রোটিয়ারা ৪৭.২ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে জয়ের দেখা পায়।
চেন্নাইয়ে টস হেরে টস জিতে ব্যাট করতে আসা পাকিস্তান শুরুতেই হারিয়ে বসে ওপেনার আবদুল্লাহ শফিকের উইকেট। দলীয় ২০ রানের সময় ৯ রান করা এই ওপেনারকে ফেরান মার্কো ইয়ানসেন। আরেক ওপেনার ইমাম-উল-হককেও ফেরান এই পেসার। ১২ রান করা ইমাম যখন ফেরেন দলীয় রান তখন ৩৮। এরপর ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। দুজনে মিলে গড়েন ৪৮ রানের জুটি।
৩১ রান করা রিজওয়ানকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন কোয়েটজে। এক প্রান্তে লড়াই চালিয়ে ফিফটি তুলে নেন বাবর আজম। তারপরই বিদায় নিতে হয় তাকে। শামসির বল উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। আম্পায়ার শুরুতে আউট না দিলেও শেষ মুহূর্তে গিয়ে রিভিউ নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। সফল রিভিউতে ফিরে যান বাবর।
মাঝে ইফতেখার আহমেদ এসে খেলেন ২১ রানের ইনিংস। এরপর জুটি গড়েন সৌদ শাকিল ও শাদাব খান। ৭১ বল খেলে দুজনে যোগ করেন ৮৪ রান। ৪০তম ওভারে কোয়েটজের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে ধরা পড়েন শাদাব। সমাপ্তি ঘটে তার ৩৬ বলে ৪৩ রানের ইনিংসটি। তবে সাদাব ফিরলেও শাকিল ঠিকই তুলে নিয়েছেন হাফসেঞ্চুরি। এরপর আর ২ রান যোগ করার পরই শামসির শিকার হন এই ব্যাটার। শেষ দিকে মোহাম্মদ নওয়াজের ২৪ বলে ২৪ রানের ইনিংসে লড়াকু সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ১০ ওভারে ৬০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন শামসি। এ ছাড়া ইয়ানসেন ৩ উইকেট ও কোয়েটজে নেন ২ উইকেট।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে কুইন্টন ডি কক শুরুটা করেন উড়ন্ত। শাহীন শাহ আফ্রিদির করা দ্বিতীয় ওভারে ১৯ রান তোলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। যেখানে ছিল চার চারটি চারের মার। তবে নিজের করা দ্বিতীয় ওভারেই এই ব্যাটারকে তুলে নেন শাহীন। আউট হওয়ার আগে ডি কক করেন ২৪ রান।
এরপর আরেক ওপেনার টেম্বা বাভুমা হাত খুলে খেলা শুরু করেন। তবে পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার ১ বল আগে দলীয় ৬৭ রানের সময় ফেরেন বাভুমা। ২৮ রান করা বাভুমাকে ফেরান বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো নামা মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র।
এরপর ফন ডার ডুসেনকে নিয়ে হাফসেঞ্চুরির একটা জুটি গড়েন এইডেন মার্করাম। ২১ রান করা ডুসেনকে ফিরিয়ে ৫৪ রানের এই জুটি ভাঙেন উসামা মির। উসামা সাদাব খানের কনকাশন হয়ে নামেন মাঠে।
এরপর হেনডরিক ক্লাসেন ঝড় তোলার আগেই ফিরতে হয়। ১২ রান করা ক্লাসেনকে ফেরান ওয়াসিম। এরপর ব্যক্তিগত ২৯ রানে ডেভিড মিলার ও ২০ রান করা মার্কো উয়েনসেন ফিরলে এক সময় মনে হয়েছিল পাকিস্তান ম্যাচটা বের করে ফেলবে। তবে জয়ের পথটা তৈরি হয় মার্করামের ব্যাটে, যদিও সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও তুলে মারতে গিয়ে উসামা মিরের বলে ক্যাচ দিয়ে বসেন তিনি। ৯৩ বলের ইনিংসে প্রোটিয়া ব্যাটার ৭টি চার ও তিন ছয়ে ৯১ রান করেন।
খেলা পুরোপুরি জমে উঠে জেরাল্ড কোয়েটজে আউট হলে। শাহিন আফ্রিদির করা বল তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে রিজওয়ানের হাতে চলে যায়। তখন দক্ষিণ আফ্রিকার রান ২৫০। লুঙ্গি এনগিদি গুরুত্বপূর্ণ ৪ রান করেন কেশব মহারাজের সঙ্গে। তাকে দারুণ এক বলে আউট করেন হারিস রউফ, এনগিদির ক্যাচ রউফ নিজেই ধরেন। এরপর আরও চাপে পড়ে প্রোটিয়ারা। কিন্তু শেষ উইকেটে ঠাণ্ডা মাথায় খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন মহারাজ ও শামসি।