আরও একটি ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতা, আবারও সাক্ষী বাজেভাবে হার। এশিয়া কাপের সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে টাইগারদের পাকিস্তান হারাল ৭ উইকেটে। বাংলাদেশের দেয়া ১৯৩ রানের লক্ষ্যে ৩ উইকেট হারালেও ৬৩ বল বাকি থাকতেই টপকে যায় বাবর আজমের দল।
লক্ষ্যটা খুব একটা বড় ছিল না বাবর, ফখর জামানদের জন্য। তাই ব্যাট হাতে পাকিস্তানের শুরুটা ছিল ধীরগতির। প্রথম ৯ ওভারে তোলেন ৩৫ রান। শরীফুল ইসলামের বলে ব্যক্তিগত ২০ রানে আউট হন ফখর। পাকিস্তানের বাবর আজমকে এদিন ইনিংস বড় করতে দেননি তাসকিন আহমেদ। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে তারকা এই ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে ফেরান তাসকিন। আউট হবার আগে বাবর করেন ১৭ রান।
এরপর ইমাম উল হকের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তারা দুই জন মিলে স্কোরবোর্ডে ৮৫ রান যোগ করেন। এই জুটি ভাঙে মিরাজের বলে ওপেনার ইমাম উল হক বোল্ড আউট হলে। ইমামের ব্যাট থেকে আসে ৭৮ রান। এরপর ব্যাটিংয়ে আসেন আগা সালমান। চতুর্থ উইকেট জুটিতে সালমান ও রিজওয়ান ৩৫* রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। পাকিস্তান ৩৯ ওভার ৩ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। রিজওয়ান করেন অপরাজিত ৬৩* রান এবং সালমান করেন অপরাজিত ১২* রান। এদিন শরিফুল, তাসকিন ও মিরাজ ১টা করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। দুই দিন আগে সেঞ্চুরি হাঁকানো মিরাজ সুপার ফোরে প্রথম ম্যাচে সুপার ফ্লপ। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই শূন্য রান করে ফেরেন এই অলরাউন্ডার। নাসিম শাহের শর্ট অব লেংথ বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মিডউইকেটে ফখর জামানের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন মিরাজ। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে প্রথম উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ, স্কোরবোর্ডে কোনো রান ওঠার আগেই। ইনিংসের প্রথম ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে কোনো রান নিতে পারেননি মোহাম্মদ নাঈম।
নাঈম শেখের সঙ্গে জুটি গড়তে আসেন সুস্থ হয়ে দলে জায়গা পাওয়া লিটন দাস। দারুণ খেলতেও থাকেন তিনি। ২২ বলে এই জুটি তুলে ফেলে ৩১ রান। এরপরই বিদায় লিটনের। আফ্রিদির অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট অব লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা দিয়েছেন লিটন। ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ গেছে রিজওয়ানের কাছে। মৃত্যু হয় ৪ চারে ১৬ রান করা লিটনের ইনিংসের।
হারিস রউফের বলে দলীয় ৪৫ রানের সময় বিদায় নেন ২০ রান করা নাঈম শেখ। আবারও ব্যাট হাতে ব্যর্থ তাওহীদ হৃদয়। হারিস রউফের গতিতে পরাস্ত হৃদয়। ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার গতির বলটি ব্যাট ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে মিস করেছেন পুরোপুরি। দশম ওভারে বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলেছে চতুর্থ উইকেট, স্কোরবোর্ডে তখন ৪৭ রান। হৃদয়ের ব্যাট থেকে আসে মাত্র দুই রান।
শুরুর চাপ সামলে পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। ১২০ বলে ১০০ রানের জুটি গড়েন সাকিব-মুশি। অধিনায়ক তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫৪তম অর্ধশতক। তবে অর্ধশতক হাঁকানোর কিছুক্ষণ পরই আউট হন সাকিব। ৫৭ বলে ৭টি চারে ৫৩ রান করে থামেন তিনি।
সাকিবের পর ব্যাট হাতে অর্ধ-শতকের দেখা পান মুশফিকও। দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকা অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার ৬৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরলে আবারও ধস নামে টাইগারদের ব্যাটিংয়ে। শামীম হোসেন, আফিফ কেউই দায়িত্বশীল ব্যাটিং করতে না পারায় শেষ পর্যন্ত ১৯৩ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
পাকিস্তানের পক্ষে এদিন বল হাতে দারুণ সফল ছিলেন হারিস রউফ। ১৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট লাভ করেন তিনি। এছাড়া নাসিম শাহ পেয়েছেন তিন উইকেট।