• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে ফিফার যেসব অভিযোগ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৫, ২০২৩, ০১:৫৭ পিএম
আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে ফিফার যেসব অভিযোগ

আর্থিক জালিয়াতির দায়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে দুই বছর নিষিদ্ধ ও ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ জরিমানা করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দীর্ঘ তদন্ত ও শুনানি চালিয়েছে ফিফা। মোট ৪টি ধারায় সোহাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

এগুলো হচ্ছে ধারা ১৫ (সাধারণ কর্তব্য), ধারা ১৩ (আনুগত্যের দায়িত্ব), ধারা ২৪ (জালিয়াতি ও মিথ্যাচার) ও ধারা ২৮ (তহবিল তছরুপ ও অপব্যবহার)।

যে অনিয়মগুলোয় আবু নাঈম সোহাগ অভিযুক্ত হয়েছেন এ প্রতিবেদনে সেগুলোই উল্লেখ করা হলো।

জার্সি কেনা

২০২০ সালের জুনে আবাসিক ক্যাম্প ও বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ম্যাচের জন্য কিছু জার্সি ও ক্রীড়া পরিধেয় সামগ্রী কেনার সিদ্ধান্ত নেয় বাফুফে। এতে দরপত্র জমা দেয় তিনটি প্রতিষ্ঠান। এরপর এগুলো সরবরাহের কাজ পায় স্পোর্টস লিংক। বাফুফে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ৩০ হাজার ২৭ ডলার (প্রায় ৩২ লাখ টাকা) মূল্যের পণ্য সরবরাহের কার্যাদেশ দেন সোহাগ।

তবে ফিফা তদন্তে উঠে আসে, যে তিনটি প্রতিষ্ঠান বিড করেছিল, সব কটিই একে-অপরের সঙ্গে যুক্ত। কোনো প্রতিষ্ঠানের সিল নেই। দুটি বিডের বক্তব্য শুরু হয়েছে একই কথা দিয়ে, ‘...পণ্য সরবরাহ করা হয়েছে।’ যদিও তাদের কোনো অর্ডারই দেওয়া হয়নি।

এ থেকে ফিফার কমিটি সিদ্ধান্তে আসে যে তিনটি দরপত্রের উৎসই এক। তিনটি আলাদা প্রতিষ্ঠান নয়।

ফুটবল কেনা

২০২০ সালের জানুয়ারিতে ১৩ হাজার ৯২১ ডলার (প্রায় ১৫ লাখ টাকা) দামে ৪০০টি ফুটবল কেনে বাফুফে। এখানেও দরপ্রস্তাব দেয় তিনটি প্রতিষ্ঠান। সেগুলো হচ্ছে, মারিয়া ইন্টারন্যাশনাল, এইচ ইউ জামান ট্রেডিং ও ওফেলিয়াস ক্লোজেট। দর প্রস্তাবে জেতে ওফেলিয়াস।

ফিফার তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, ওফেলিয়াস ক্লোজেটের যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে তাদের অস্তিত্ব নেই। তারা নারীদের পোশাক বানায়। বাফুফেকে ফুটবল সরবরাহের প্রতিষ্ঠান নয় এটি।

বিমানের টিকিট

২০১৯ সালের নভেম্বরে ফ্লাইট টিকিট বাবদ আল মারওয়া ইন্টারন্যাশনালকে ১৯ হাজার ৯২৫ ডলার (প্রায় সোয়া ২১ লাখ টাকা) দেয় বাফুফে। খাত হিসেবে দেখানো হয় জাতীয় দলের ওমান সফর। এ ক্ষেত্রে দরপ্রস্তাব দেয় আর মারওয়া, পূরবী ইন্টারন্যাশনাল ও মাল্টিপ্লেক্স ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস।

পূরবী জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিমানের টিকিট কেনায় দরপ্রস্তাব দেওয়ার কথা নয় বলে উল্লেখ করেছে ফিফার তদন্তকারী সংস্থা। পূরবী ও মাল্টিপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, তারা দরপ্রস্তাব দেয়নি। বাফুফের সঙ্গে কোনো কাজও করেনি।

ঘাস কাটার যন্ত্র

২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ১ হাজার ৪১২ মার্কিন ডলারে (প্রায় দেড় লাখ টাকা) ঘাস কাটার যন্ত্র কেনে বাফুফে। দুটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দেয়। একটি বাংলাদেশ হার্ডওয়্যার, আরেকটি শোভা এন্টারপ্রাইজ। কাজ পায় বাংলাদেশ হার্ডওয়্যার। ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর সোহাগের কার্যাদেশে শারমিন এন্টারপ্রাইজ নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দেয়।

এখানে পাওয়া অনিয়মের মধ্যে আছে বাংলাদেশ হার্ডওয়্যার প্রতিষ্ঠানের নামের বানানে ভুল। শোভা এন্টারপ্রাইজ আর শারমিন এন্টারপ্রাইজের দরপ্রস্তাব দেখতে এক রকম। শারমিন এন্টারপ্রাইজে যোগাযোগ করলে তারা নিজেদের শোভা এন্টারপ্রাইজ হিসেবে পরিচয় দেয়। বাংলাদেশ হার্ডওয়্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

এ বিষয়ে ফিফার তদন্তে বলা হয়েছে, সব দরপত্রই একই জায়গা থেকে করা হয়েছে।

Link copied!