তৃতীয় সেশনে রাজত্ব চালাচ্ছিল কিউই ব্যাটাররা। কিন্তু নতুন বল হাতে পেয়েই জ্বলে উঠলেন বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলাম। প্রথমে শতক হাঁকানো উইলিয়ামসন, এরপর সোধিকে আউট করে লিড পাওয়ার আশা নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৬৬ রান। কিউইরা এখনো পিছিয়ে আছে ৪৪ রানে। উইকেটে আছেন দুই অপরাজিত ব্যাটার ৭ রান করা কাইল জেমিসন ও ১ রান করা টিম সাউদি।
৯ উইকেটে ৩১০ রান নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ প্রথম বলেই হয় অলআউট। পরে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বোলিংয়ের শুরুটা করেন শরিফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। এক পেসার নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ এই জুটিতে উইকেট পায়নি। বোলিং বদলাতেই বদলে যায় ভাগ্যও।
প্রথম উইকেটটা পান তাইজুল ইসলাম। ম্যাচের ১৩ ওভারে তাইজুলের বলে রিভার্স সুইপ খেলার চেষ্টা করেছিলেন টম লাথাম। কিন্তু ব্যাটে ঠিকমতো তিনি নিতে পারেননি। তাতে ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ উঠে যায়। আর সেটি লুফে নেন নাঈম হাসান। ৪৪ বলে ২১ রান করে সাজঘরে ফেরেন লাথাম।
এরপরে ডেভন কনওয়েকে সঙ্গ দিতে উইকেটে আসেন কেইন উইলিয়ামসন। তবে, এই জুটি গড়ে ওঠার আগেই বিদায় নেন কনওয়ে। ১৬ তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে ক্যাচ দেন আরেক ওপেনার কনওয়ে। উইকেটের পাশেই দাঁড়িয়ে অসাধারণভাবে ক্যাচটি লুফে নেন শাহাদাত হোসেন দিপু। কনওয়ে ৪০ বলে ১২ রান করেন। 
বিরতির পর মাঠে ফিরে নিজের নামের পাশে বেশি রান জমা করতে পারলেন না নিকোলস। ৪২ বলে ১৯ রান করে শরিফুলের বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ হন তিনি। তার আগে উইলিয়ামসনের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি করেছিলেন নিকোলস।
এরপর উইলিয়ামসনের সঙ্গী হন ড্যারল মিচেল। দুজন মিলে গড়েন ৬৬ রানের জুটি। সেটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। এগিয়ে এসে মিচেল খেলতে যান, তখন বল একটু শর্ট লেন্থে করেন তাইজুল; বল টার্ন করে বেরিয়ে যায়। স্টাম্প ভাঙতে ভুল করেননি সোহান। সেশনটা পুরোপুরি বাংলাদেশের হতে পারতো, কিন্তু হয়নি তাইজুলের জন্যই। নাঈম হাসানের বলে উইলিয়ামসনের সহজ ক্যাচ ছাড়েন তাইজুল।
মিচেলের পর ক্রিজে নামা টম ব্লান্ডেলকে অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে দিলেন না নাইম। কট বিহাইন্ড হওয়ার আগে ২৩ বলে ৬ রান করেন উইকেটকিপার এই ব্যাটার। এরপর ফিলিপসকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে আবারও পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি গড়েন উইলিয়ামসন। এ নিয়ে এক ইনিংসে তৃতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটির অংশ হলেন উইলিয়ামসন।
 তাইজুলের বলে স্লিপে দাঁড়ানো শান্তর হাতে ক্যাচ দেন ফিলিপস। ৬২ বলে ৪২ রান করেন তিনি। এর মধ্যে উইলিয়ামসন তুলে নেন সেঞ্চুরি। ডন ব্র্যাডম্যান, শচীন টেন্ডুলকার ও বিরাট কোহলির পর সবচেয়ে কম ইনিংসে ২৯তম টেস্ট সেঞ্চুরি পান তিনি। 
তাইজুলের আর্ম বলে সামনে এসে খেলার চেষ্টা করেও বল খুঁজে পাননি উইলিয়ামসন। ব্যাট-প্যাডের মাঝে জায়গা খুঁজে নিয়ে উইলিয়ামসনকে বোল্ড করেন তাইজুল। দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে নতুন বলের সুবিধাটা আরও একবার নিতে পেরেছেন বাংলাদেশ দলের এই বাঁহাতি স্পিনার।
নিজের পরের ওভারেই সদ্য ক্রিজে আসা ইশ সোধিকে ০ রানে শর্ট লেগের ক্যাচ বানান তাইজুল। বাকি সময়টা নিউজিল্যান্ড ইনিংসে আর কোনো ক্ষতি হতে দেননি কাইল জেমিসন ও টিম সাউদি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩১০, ৮৫.১ ওভার (জয় ৮৬, জাকির ১২, শান্ত ৩৭, মুমিনুল ৩৭, মুশফিক ১২, শাহাদাত ২৪, মিরাজ ২০, সোহান ২৯, নাঈম ১২, তাইজুল ৮, শরিফুল ১৩; সাউদি ১৪-২-৪৩-১, জেমিসন ১৭-৫-৫২-২, প্যাটেল ২৪-১-৭৬-২, সোধি ১৪-১-৭১-১, ফিলিপস ১৬-১-৫৩-৪)
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৮৪ ওভারে ২৬৬/৮ (ল্যাথাম ২১, কনওয়ে ১২, উইলিয়ামসন ১০৪, নিকোলস ১৯, মিচেল ৪১, ব্লান্ডেল ৬, ফিলিপস ৪২, জেমিসন ৭*, সোধি ০, সাউদি ১*; শরিফুল ১১-২-৪৪-১, মিরাজ ১৯-৩-৫৭-১, তাইজুল ৩০-৭-৮৯-৪, নাঈম ২২-৩-৬১-১, মুমিনুল ২-১-২-১)
 
                
              
 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    



































