• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫

মশা কেন কিছু মানুষকে বেশি কামড়ায়?


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২২, ০২:৫৩ পিএম
মশা কেন কিছু মানুষকে বেশি কামড়ায়?

কয়েকজন একসঙ্গে থাকলে দেখা যায় কোনো একজনের মাথার ওপর একঝাঁক মশা এসে জড়ো হয় বা কোনো একজনকে মশা একটু বেশিই কামড়ায়। আমাদের অনেকের সঙ্গেই এমন ঘটনা ঘটে বা আমরা অনেকের সঙ্গেই এমন হতে দেখি। কিন্তু কেন এমন হয়? কেন আমরা অনেকেই মশাকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করি?

সম্প্রতি এই আশ্চর্যজনক বিষয়টির ওপর একটি গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক। তারা অদ্ভুত এক ব্যাপার লক্ষ করেছেন সেখানে। তারা দেখেছেন, সত্যি সত্যিই কিছু মানুষ মশাকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে।

আমরা জানি, মানবদেহ থেকে বিভিন্ন গন্ধ সৃষ্টি হয় এবং ব্যক্তিভেদে এই গন্ধ আলাদা হয়। কিছু গন্ধ আছে যেগুলোর প্রতি মশা বেশি আকৃষ্ট হয়। এই গন্ধ তৈরি করে মানবদেহের কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়া।

আমাদের দেহের বাহ্যিক ত্বকে থাকে বিভিন্ন ধরনের অ্যাসিড। সেই অ্যাসিডগুলো খেয়ে গন্ধ তৈরি করে ত্বকের ব্যাকটেরিয়া। এই গন্ধ আমৃত্যু একই থাকে এবং ব্যক্তিভেদে মানুষের ত্বকে এই অ্যাসিডের পরিমাণ ভিন্ন হয়। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, একটি নির্দিষ্ট গন্ধের প্রতি মশারা বেশি আকৃষ্ট হয়। এই গন্ধ উৎপাদনকারীরা সারা জীবনই মশাকে আকৃষ্ট করে থাকে। তারা এই গন্ধ তৈরির জন্য দায়ী অ্যাসিডটি অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি ধারণ করেন। তবে সেই অ্যাসিডটি খুঁজে বের করতে আরও গবেষণা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

গবেষকরা কয়েকজন ব্যক্তির দেহের গন্ধ পরীক্ষা করে এই তথ্য দিয়েছেন। বেশ কয়েক বছর লেগেছে এ গবেষণাটি করতে। তারা প্রথমে ৬৪ জন ব্যক্তিকে নাইলনের লম্বা হাতমোজা পরতে দেন। এই মোজাগুলো তাদের হাত কনুই পর্যন্ত ঢেকে দেয়। বেশ কিছুক্ষণ সেগুলো পরে থাকার কারণে মোজার সুতায় দেহের গন্ধ যুক্ত হয়। বিজ্ঞানীরা ভিন্ন ভিন্ন গন্ধযুক্ত মোজাগুলো একটি লম্বা টিউবের মধ্যে আলাদা আলাদা রাখেন। এরপর তারা সেই টিউবে ছেড়ে দেন মশা। তারা লক্ষ করেন, কয়েকটি মোজায় মশারা বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে। আশ্চর্যজনকভাবে, যে মোজাটিতে মশার পরিমাণ বেশি ছিল, সেটি মশাদের জন্য অন্যান্য মোজার তুলনায় ১০০ গুণ বেশি আকর্ষণীয় ছিল।

পরীক্ষার ফলাফলে নিশ্চিত হওয়ার জন্য টানা কয়েক বছর একই ব্যক্তিদের ওপর এই পরীক্ষা চালানো হয়। তবে ফলাফলের কোনো পরিবর্তন লক্ষ করা যায়নি। অর্থাৎ যিনি মশাকে আকৃষ্ট করেন, তিনি আজীবন মশার প্রিয়ই থাকবেন।

পরীক্ষাটিতে মশার যে প্রজাতিটি ব্যবহার করা হয়েছিল, সেটি ছিল আমাদের পরিচিত ডেঙ্গু মশা বা এডিস এজেপ্টি। এই এডিস মশা হলুদ জ্বর, জাইকা ও ডেঙ্গুর মতো মারাত্মক রোগ ছড়িয়ে থাকে।

মশা নিয়ে কাজ করা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মশার সহ্যশক্তি অনেক প্রবল। চর্বিহীন এই প্রাণী কামড়াতে ভালোবাসে এবং কোনো বাধাবিপত্তিই তাদের এই কাজ থেকে বিরত করতে পারে না। অবশ্য প্রাণ হারালে সেটা ভিন্ন বিষয়!

Link copied!